রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব ওরফে হিমেল ট্রাকচাপায় নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত চালককে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত চালক মো. টিটু মিয়া (৪২) কাশিয়াডাঙ্গা থানার বালিয়ার বাসিন্দা।
আজ বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ১টার দিকে তাকে জেলার কাশিয়াডাঙ্গা থানার বালিয়া থেকে আটক করা হয়।
কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ট্রাকচালক টিটুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের ভেতরে হবিবুর রহমান হলের সামনে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হিমেলকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা পাঁচটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নির্মাণাধীন ভবনেও ভাঙচুর চালায়। এ সময় প্রক্টর লিয়াকত আলী ঘটনাস্থলে আসলে তাকে ধাওয়া দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা।
পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে মঙ্গলবার রাতে মৌখিকভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। পরে তারা উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে ৭ দফা দাবি দিয়ে (সকাল পর্যন্ত) আন্দোলনে বিরতি ঘোষণা করেন।
এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মাহবুব হাবিব হিমেলের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। একই সঙ্গে আজকের মধ্যেই হিমেলের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক শিক্ষার্থী রায়হানর চিকিৎসার সব খরচও প্রশাসন বহন করবে বলে জানান তিনি।
আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হিমেলের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে দেওয়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এসব তথ্য জানান উপাচার্য।
এর আগে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মাহমুদের মরদেহ প্রথমে চারুকলা অনুষদে আনা হয়। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার মুক্তমঞ্চে নেওয়া হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেখানে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। এরপর মাহমুদের মরদেহ জানাজার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। প্রথম জানাজা শেষে হিমেলের মরদেহ নিয়ে নাটোরের উদ্দেশে রওনা হন তার মা ও মামা।
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব ওরফে হিমেল শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক ছাত্র। এ ছাড়া তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ড্রামা অ্যাসোসিয়েশনের (রুডা) সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।