মোঃ মোশফিকুর ইসলাম, নীলফামারীঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে নিজ বাসা থেকে রিয়াজ উদ্দিন (৬৫) নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে আটক করা হয়েছে।
(২৮ জানুয়ারি) শুক্রবার সকালে নিজের শোয়ার ঘরের বিছানায় তার রক্তাক্ত লাশ লেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের ১০ নং ওয়ার্ডের কাজীপাড়া এলাকায় জামে মসজিদ সংলগ্ন বাসায়।
নিহত রিয়াজ উদ্দিন মৃত কমর উদ্দিনের ছেলে এবং ওই বাড়ি ও শহরের শহীদ ডা: শামসুল হক সড়কের জামিল গার্মেন্টসের মালিক ছিলেন তিনি।
সৈয়দপুর থানা সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে খবর পেয়ে ব্যবসায়ী রিয়াজ উদ্দিনের তিনতলা বাসভবনের নিচতলার শোয়ার ঘর থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। তার মাথায় কোনো ভারী বস্তু দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। ঘরের দেয়ালে রক্তের ছিটে লেগে আছে।
নিহতের বড় ছেলে জামিল উদ্দিন (সনু) বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো বাবা-মা নিচতলায় আলাদা আলাদা রুমে ঘুমান। আমরা চার ভাই ওপরের তলায় ঘুমাই। মা সকালে বাবার রুমে গিয়ে বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থা দেখে আমাদের খবর দেন।’
তিনি জানান, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস রোগের কারণে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। তার কোনো শত্রু নেই। আমরা চার ভাই- সনু, মনু, দানিস ও ইমরান। সবাই একই ভবনে থাকি। কিভাবে এমন হলো আমরা কেউই জানি না।’
এলাকাবাসীরা জানান, রিয়াজ উদ্দিন এত বয়সেও তার ব্যবসা ও সহায়-সম্পত্তি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতেন। এনিয়ে ছেলেদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। কিছুদিন থেকে তাই পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এরই মধ্যে এমন ঘটনায় ধারণা করা হচ্ছে ছেলেরাই সম্মিলিতভাবে বা কেউ একজন বৃদ্ধকে খুন করেছে।
শুক্রবার দুপুর নাগাদ নীলফামারী থেকে ডিবি’র ওসি আখেরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম ও রংপুর থেকে সিআইডি’র সাব ইন্সপেক্টর রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি ক্রাইম সিন তদন্ত দল ঘটনাস্থলে এসেছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে নিহত রিয়াজের স্ত্রী জরিনা বেগম (৫৫), বড় ছেলে সনু ও ছোট ছেলে ইমরানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খান বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।