কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ মৎস ভান্ডার খ্যাত উত্তরাঞ্চলের নওগাঁ জেলার আত্রাইয়ে এবার দেশীয় প্রজাতি মাছের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে শুটকি তৈরির ভরা মৌসুমেও শুটকি ব্যবসায়ীদের মাঝে লোকসানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই শুটকি তৈরির জন্য সাজ-সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হলেও মাছের অভাবে সে গুলো এখন মাছশূন্য ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের মত এলাকায় তেমন বন্যা না হওয়ায় নদী, নালা, খাল বিলের পানি আগাম শুকিয়ে যাওয়ায় যে সময় দেশীও মাছ বাজার প্রচুর থাকার কথা। সে সময় দেখা মিলছে না দেশীও মাছ। ফলে শটকি ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা।
জানা গেছে, মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত স্থান সমূহের মধ্যে আত্রাই একটা বিখ্যাত স্থান। প্রতিদিন শত শত টন মাছ আত্রাই থেকে রেল পথে, সড়ক ও নৌ পথে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়। সে অনুযায়ী শুটকি উৎপাদনেও আত্রাইয়ের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, রংপুর, নীলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জসহ দেশের প্রায় পনের/বিশ টি জেলাতে বাজারজাত করা হয় আত্রাইয়ের শুটকি মাছ। আর এ মাছের শুটকি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় শতাধিক পরিবার।
আত্রাই উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া গ্রাম শুটকি তৈরিতে বিশেষ ভাবে খ্যাত। এ গ্রামের শতাধিক শুটকি ব্যবসায়ী এ পেশার সাথে সর্ম্পৃক্ত। শুধু বর্ষা মৌসুমে শুটকি তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে তারা পরিবারের সারা বছরের ভরণ পোষণ নিশ্চিত করেন।। এবারে বন্যা কম হওয়ায় নদী, নালা, খাল-বিল আগাম শুকিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে দেশীয় প্রজাতি মাছের সংকট। ফলে বাজারে মাছ কম কিন্তু মূল্য বেশি হওয়ায় শুটকি তৈরিতে খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় শুটকি ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে লোকসান।
ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী শ্রী রামপদ শীল, মন্জুর মোল্লা, ওছমান শেখ,মোজাহার মোল্লা, নাফিকুল সরদার বলেন- শুটকি ব্যবসার সাথে আমরা দীর্ঘদিন থেকে জড়িত। শুটকি তৈরিতে অর্থ খরচের সাথে সাথে যথেষ্ট শ্রম ব্যয় হয়।সর্বপোরি রৌদ্র, বৃষ্টি, মাছের র্দূগন্ধ সবকিছুকে উপেক্ষা করে পরিবার পরিজন নিয়ে এ পেশা চালিয়ে আসছি। পুঁটি, খলিশা, চাঁন্দা, রাইখর, শাঁটিসহ বিভিন্ন জাতের দেশি মাছের শুটকি আমরা তৈরি করি। এর মধ্যে বিশেষ করে পুঁটিও শাঁটি মাছের শুটকির ব্যপক চাহিদা রয়েছে। এবারে মাছ কম কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় আমাদেদর লোকসান গুনতে হচ্ছে। অনেকে শুটকি তৈরির সাজসরঞ্জাম তৈরি করলেও মাছের অভাবে সে গুলো পড়ে রয়েছে। এবারে ব্যবসা মন্দা হওয়ায় সারা বছর পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা কি ভাবে চলবো তা নিয়ে আমরা চরম উদ্বিগ্ন রয়েছি।