বিনোদন ডেস্কঃ একটি প্লাস্টিকের সুতার (দড়ি) সূত্র ধরেই উদঘাটিত হয়েছে অভিনেত্রী শিমু হত্যার মূল রহস্য বলে জানিয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক ও দাম্পত্য জীবনে কলহ থাকায় শিমুকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন এই অভিনেত্রীর স্বামী নোবেল। আর হত্যার পর লাশ গুমের জন্য বন্ধু ফরহাদের সহযোগিতা নেন তিনি।
পুলিশের তদন্ত সূত্র জানায়, মরদেহ উদ্ধারের পর তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে শিমুর পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে ও শিমুর বাসায় গিয়ে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে। এ সময় একটি প্লাস্টিকের সুতার (দড়ি) সূত্র ধরে উদঘাটিত হয় হত্যার মূল রহস্য। লাশ গুম করতে বস্তা দুটি যে প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে সেলাই করা হয়েছিল, সেই দড়ির হুবহু এক বান্ডিল শিমুর স্বামী নোবেলের গাড়িতে পাওয়া যায়। দুর্গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে গাড়িটি ধোয়া হয়।
জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে শিমুকে হত্যা করেছে স্বামী। গত রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে ৮টার দিকে তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এরপর বন্ধুকে মুঠোফোনে কল করে ডেকে আনেন শিমুর স্বামী।
মরদেহ গুমের বিষয়ে পুলিশের ওয়েবসাইটে বলা হয়, পরিকল্পনা করে বাইরে থেকে বস্তা এনে শিমুর লাশ লম্বালম্বিভাবে দুটি পাটের বস্তায় ভরে প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে সেলাই করেন স্বামী ও তার বন্ধু। বাড়ির দারোয়ানকে নাশতা আনতে বাইরে পাঠিয়ে দেন তারা। এরপর নিজের ব্যক্তিগত গাড়ির পেছনের আসনে অভিনেত্রীর লাশ নিয়ে বেরিয়ে যান। প্রথমে মিরপুরের দিকে গিয়েছিলেন দুই আসামি। কিন্তু সেখানে লাশ গুমের উপযুক্ত পরিবেশ না পেয়ে বাসায় ফেরেন তারা। ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আবার লাশ নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বছিলা ব্রিজ হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কদমতলী এলাকার আলীপুর ব্রিজ যান। সেখানে ৩০০ গজ দূরে সড়কের পাশে ঝোপে লাশটি ফেলে চলে যান শিমুর স্বামী ও তার বন্ধু। তখন বাজে রাত সাড়ে ৯টা।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই আসামিই মাদকাসক্ত ও বেকার। তবে অভিযুক্ত বা তাদের পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) তাদের আসামি করে নিহতের বড় ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নোবেল ও ফরহাদকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। পরে আদালত তাদের দুইজনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।