তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের নৌকার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে ও স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেল আহমদ ও তার সমর্থকরা। এমপি অক্ষত অবস্থায় থাকলেও দুই পক্ষের সংঘর্ষে এমপির গানম্যান, গাড়িচালক ও ব্যক্তিগত একান্তসহকারীসহ ৭ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এমপিকে নিরাপদে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত দুজনকে সিলেটে রেফার্ড করা হয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাটি রবিবার রাত ১০টায় উপজেলার মুন্সিবাজারে ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদশীরা জানান, রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় এমপি আব্দুস শহীদের ছোট ভাই ইফতেখার আহমদ নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপর চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিদ্রোহী বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেল আহমদ তরফদার। রবিবার রাতে ব্যক্তিগত একটি অনুষ্ঠান শেষ করে মৌলভীবাজার ফেরার পথে মুন্সিবাজারস্থ নৌকার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে এলে এলাকাবাসীর অনুরোধে চা খাওয়ার সময় বিদ্রোহী প্রার্থী জুনেল আহমদ তরফদার তার সমর্থকদের নিয়ে নৌকার প্রধান নির্বাচনী অফিসে হঠাৎ আচরণবিধির অজুহাতে অতর্কিতভাবে দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। তখন অফিসে বসা নৌকার লোকজন এগিয়ে গেলে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। হামলার সময় অফিসের শাটার বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাইরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জুনেল আহমদের সমর্থকরা অফিসের সামনে রাখা এমপির গাড়িতে লাটিসোঁটা দিয়ে আঘাত করে। সমর্থকদের হামলায় এমপি আব্দুস শহীদের গানম্যান তরিকুল, গাড়িচালক স্বপন, ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী ইমাম হোসেন সোহেল, শ্রীমঙ্গলের আওয়ামী লীগ নেতা খালেদ সাইফুল্লাহসহ পাঁচজন আহত হন। তাদের একজনের মাথা ফেটে গেছে এবং একজনের হাত ভেঙে গেছে। পুলিশ এসে আব্দুস শহীদ এমপিকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়। পুলিশ কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এলে গুরুতর আহত গানম্যান তরিকুল, গাড়িচালক স্বপন ও ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী ইমাম হোসেনকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। মুন্সিবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আহতদের দেখতে কমলগঞ্জ হাসপাতালে অবস্থান করেন। পরে রাত ১২টায় শ্রীমঙ্গলে নিজ বাসায় চলে যান।
এদিকে ঘটনার পর বিদ্রোহী প্রার্থী ও সমর্থকরা বাজার এলাকা থেকে সরে যান। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা আহত হয়েছেন বলে চেয়ারম্যান জুনেল আহমদ তরফদার দাবি করেছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। কমলগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এমপি সাহেব যাওয়ার সময় তার গাড়িতে হামলা করা হয়। তিনি অক্ষত আছেন। তার গানম্যান ও গাড়িচালক আহত হন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।