চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনায় ১৩ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে তিনমাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় ৯ আসামি কারাগারে উপস্থিত ছিলেন। চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় শুনতে মামলার বাদী ভুক্তভোগী সেই নারীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তার আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রাসুল মামুন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে ৯ আসামি জেল হাজতে রয়েছে এবং ৪ আসামি পলাতক রয়েছে। গত এক বছরে আদালত বাদীসহ ৪০ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করে ৩০ কার্যদিবসে শুনানি শেষে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মামলার এজহার সুত্রে জানা যায়, গত বছর ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে ঘরে ঢুকে ওই নারীর স্বামীকে অন্য কক্ষে বেঁধে রেখে আসামিরা তাকে নির্যাতন করেন। তারা নির্যাতন করার ভিডিওচিত্রও ধারণ করেন। এরপর ১ মাস ধরে গৃহবধূকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন অনৈতিক প্রস্তাবের রাজি না হলে ভিডিওচিত্রটি তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন। ৩২ দিন পর অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ভিডিওটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৪ অক্টোবর নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ধর্ষণ, নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে তিনটি মামলা করেন নির্যাতিত নারী। তিনটি মামলার মধ্যে ৪ অক্টোবর ধর্ষণের মামলায় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও আবুল কালামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। আর বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার রায় আজ দেওয়া হয়।