মোঃ খোরশেদ আলম, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধিঃ “দুঃখে যাদের জীবন গড়া তাদের আবার দুঃখ কিসের” হা বলছি কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর উপজেলার ৪নং পূর্বধৈইর পূর্ব ইউনিয়নের ৭নং ওর্য়াডের হীরাপুর গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে মনু মিয়ার কথা। তিনি ৪১ বছর ধরে কলা বিক্রি করে সংসার চালায় ৮০ বছর বয়সের অসহায় মনু মিয়া। ১৯৮০ সালে কলার বোঝা যে কাঁধে নিয়েছিলেন আশির (৮০) বেশি বয়স হলেও নামেনি এখনও কাঁধ থেকে সেই কলার বোঝা। বয়স এবং কলার বোঝার ভারে বাঁকা হয়ে গেছে তার মেরুদণ্ড। কি আর করার আছে জীবনতো টিকিয়ে রাখতে হবে। নিম্নআয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিবর্তন হলেও ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি মনু মিয়ার।
মনু মিয়া জানান তার চার ছেলে ২ মেয়ে। বড় ৪ ছেলে ঢাকা থাইকা রিকশা চালায়।তাদের আলাদা সংসার।তারাই চলতে কষ্ট হয়।আমারে কিভাবে সাহায্য করবে। আমি আর আমার স্ত্রী(৭৫) একসাথে আছি। ১৯৮০ সালে থেকে ফেরী করে কলা বিক্রি শুরু করি। প্রথম দিকে চিটাগাং ছিলাম। রোদ-বৃষ্টি ঝড় কোন কিছুতেই বসে থাকতে পারিনা। কোম্পানীগঞ্জের পাইকারী আড়ৎ থেকে কলা নিয়ে হেটে রাস্তায় রাস্তায় বিক্রি করি এবং বিক্রি শেষে বাড়ি যাই। দিন শেষে যা পাই তা দিয়া জীবনটা চালাই।রোগের তাড়নায় বাঁচিনা।দেহ মন কোনটাই চলে না তবুও বসে থাকতে পারিনা। কে দিবে ওষুধের টাকা আর কে চালাবে সংসার।
মনু মিয়া দুঃখের সাথে জানান কাপড় ছাড়াই চলছি সারা জীবন এই লুঙ্গি, আর ছেড়া গেঞ্জি পরে জীবনটা কাটাইয়া দিলাম। ছোট সময় বাবা মারা গিয়েছিল সেই থেকে ভাই বোন আর মায়ের ভরণ পোষণের যে দায়িত্বটা ঘাড়ে তুলে নিয়েছিলাম সেই দায়িত্বের বোঝাটা আজও ঘাড় থেকে নামাতে পারেননি। তিনি জানেন না এর শেষ কোথায়?জায়গা জমি বলতে বাপের ভিটায় দুটি ঘর আছে এছাড়া আর কিছু নাই। জীবনের এই অন্তিম মূহর্তে সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে হয়তো বাকি সময়টা তার আর কষ্ট করা লাগতো না একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারতো মনু মিয়া।