ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় গত ২৮ নভেম্বর ইউপি তৃতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খনগাঁও ইউনিয়নের ঘিডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট গণনার পরে কারচুপির অভিযোগ ও ফলাফলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ৩ জন নিহত ও অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
গত রোববার রাত সাড়ে নয় টার দিকে পীরগঞ্জ উপজেলার ৩নং খনগাঁও ডিঘোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, ঘিডোবপুর গ্রামের সাহাবলি আহম্মেদ (৩৫), মোজাহারুল ইসলাম (৪০) ও অবিনাশ চন্দ্রের ছেলে আদিত্য (২০)। ঘটনাস্থলেই ১জন ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আহতরা হলেন -উপজেলার ঘিডোর গ্রামের অবিলাশের ছেলে অমিত রায়, জহুরুলের ছেলে সবুজ আলী, তমিউদ্দীনের ছেলে সুজা আহম্মেদ, আব্দুল বাকির স্ত্রী রহিমা বেগম ও খনগাঁও গ্রামের তৈয়বুর রহমানের ছেলে রাব্বানী। তারা ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিংসাধীন। ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক অফিসার রাকিবুল ইসলাম চয়ন বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ চারজনের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।’
স্থানীয়রা জানান, রাত ৮টার দিকে ভোটের ফলাফল গণনার সময় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নুরুজ্জামান ও তার সমর্থকরা প্রিজাইডিং অফিসারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঘিরে ফেলেন। এ সময় পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে এলে তার গাড়ি ভাঙচুর করে তারা। প্রায় দেড়ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসলে তাদের ওপর আক্রমণের চেষ্টা চালায়। এ সময় আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পীরগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে একজন ও ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর আরও একজনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা কোনোভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলেন না। তাদের ওপরে হামলা করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে বিজিবি গুলি ছুড়েছে। এতে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হয়েছেন।’