লাইফস্টাইল ও স্বাস্থ্য ডেস্কঃ ডিম প্রোটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পরিচিত। রোজ একটি করে ডিম খাওয়ার কথা অনেক চিকিৎসকই বলেন। চিকিৎসকদের মতে, বেশিরভাগ পুষ্টিকর উপাদান প্রাকৃতিকভাবে যেসব খাবারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হল ডিম। যার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় ডিম রাখার বিকল্প নেই।
চীনে প্রায় ৫ লাখ লোকের ওপর এক গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিন একটা করে ডিম খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমতে পারে। ডিম থেকে শারীরিক উপকার পেতে হলে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করতে হবে।
যদিও ডিমের কুসুমে অধিক মাত্রায় কোলেস্টেরল থাকে, তাই যাদের হার্ট ডিজিজ রয়েছে এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তাদের জন্য ডিমের কুসুম ক্ষতিকর এরকম একটা ধারণা ছিল আগে। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে, ডিমের কুসুম থেকে যে কোলেস্টরেল পাওয়া যায় তা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় না।
ডিমে ফলেট, কোলিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, লেটিইন এবং জি-অ্যাকজানথাইন থাকে। অনেকেই কুসুম ছাড়া ডিম খান কিন্তু কুসুমসহ ডিম ক্ষতিকর নয়।
কিন্তু ডিম আসলে কীভাবে খাওয়া উচিত? কোনভাবে ডিম রান্না করে খাওয়া শরীরের জন্য সবচেয়ে ভালো আর কীভাবে ডিম খাওয়া শরীরের জন্য কম ভালো তা কি কেউ জানেন?
সাধারণত কেউ ডিম সেদ্ধ করে খান, কেউ খান ভেজে। সেই সেদ্ধরও আবার হয় নানা ধাপ। কেউ পুরো সেদ্ধ করে খান, কেউ অর্ধেক। কেউ কেউ আবার একটু লবণ মিশিয়ে কাঁচাই খেয়ে নেন ডিম। শরীরচর্চার ফাঁকে বিভিন্ন ফল-সবজি দিয়ে বানানো স্মুদিতে ঢেলে দেন দুটি কাঁচা ডিম।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কাঁচা ডিম খাওয়াই সবচেয়ে খারাপ। তাতে শরীরের ক্ষতি হয়, এমন নয়। কিন্তু তুলনায় কম পুষ্টি যায় শরীরে। ডিমের সব প্রোটিন ভালোভাবে পায় না শরীর, যদি তা রান্না না করা হয়। অনেকে ডিম বেক করেও খান। সকালে ওভেনে বসিয়ে দেন ডিম। কিন্তু এতে বাকি সব পুষ্টিগুণ থাকলেও বেশিক্ষণ তাপে থেকে ভিটামিন ডির মাত্রা কিছুটা কমে যায়। তাই সাধারণভাবে সেদ্ধ করে কিংবা হাল্কা তেলে অল্প ভেজে ডিম খেলে শরীরের অনেক বেশি উপকার হয় বলেই দেখা গেছে গবেষণায়।
আসুন জেনে নিই ডিম হাল্কা ভেজে বা ওমলেট করে কিংবা সিদ্ধ করে খেলে কি কি পুষ্টিগুণ পাওয়া যেতে পারে?
ডিমের ওমলেটে এ রয়েছে ৯০% ক্যালরি, ৬.৮ গ্রাম ফ্যাট, ২ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ১০% ফসফরাস।
আর সেদ্ধ ডিমে রয়েছে ৭৮ % ক্যালরি, ৬.৩% গ্রাম প্রোটিন, ৫.৩% গ্রাম ফ্যাট, ০.৬% গ্রাম কার্বহাইড্রেট, ১.৬% গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ১২.১০% ভিটামিন ‘বি’, ৯% ফসফরাস।
তবে বেশিরভাগ পুষ্টিবিদ ডিমের ওমলেট না করে খাবার পরামর্শ দেন কারণ ডিম যে তেলে ভাজা হয়, তার মধ্যেকার স্যাচুরেটেড ফ্যাট কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। আর ব্লাডপ্রেশারের সমস্যা থাকলে এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ডিমের সাথে কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত নয়?
ডিমের সঙ্গে এমন অনেক খাবার যেমন কলা, মধু, লেবু, টক দই একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। এতে বদহজমসহ পেটের নানাবিধ সমস্যা হয় বলে মত দিয়েছেন অনেক বিশেষজ্ঞরা।
ডিমের পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ রেখে কীভাবে সংরক্ষণ করবেন?
ডিমকে ভাল রাখতে ফ্রিজে রাখুন। ডিম বাক্সের ভেতরে থাকলে ডিমের সাদা অংশ তিন সপ্তাহ পর্যন্ত ভাল থাকে। কিন্তু ডিমের কুসুম ভাল থাকে তিনদিন। ফ্রিজে ডিমের সাদা ও কুসুম ভাল থাবে তিন মাস পর্যন্ত।