তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউপি পশ্চিম বাছিরপুর এলাকার ছোট একটি খালের ওপর প্রায় ১১ বছর পূর্বে নির্মাণ করা হয় একটি কালভার্ট। নির্মাণের পর থেকে কালভার্টের উভয় পাশে মাটি না ফেলায় কারনে দীর্ঘদিন যাবত এলাকার মানুষ আছে চরম দুর্ভোগে। দীর্ঘদিন যাবত কালভার্টের উভয় পাশে মাটি না থাকায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ এখন চরম তুঙ্গে। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরেও তা সাধারণ মানুষের কোনো কাজে না, এসে উল্টো ভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে। কালভার্টের দুপাশে উঠা-নামার ক্ষেত্রে মাটি না থাকায় কোনো ধরনের যানবাহন তো দূরের কথা সাধারণ মানুষের হেঁটে চলাচল করাও বেশ ভোগান্তিসহ বিপদজনকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশেপাশের প্রায় একশ টি পরিবারের শত শত মানুষ ঝুলন্ত অবস্থায় কালভার্টের একপাশ দিয়ে অনেক কষ্ট করে পারাপার হচ্ছেন। এ কালভার্টটি পারাপারে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ছে এলাকার বয়স্ক, বয়জেষ্ঠ ব্যক্তি সহ শিশুরা। ঝুঁকি নিয়ে কালভার্ট টি পারাপার হতে গিয়ে প্রতিদিনই ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। বর্তমানে কালভার্টটি ব্যবহার করতে না পেরে এলাকার গৃহবধূরা কালভার্টের একপাশে লাকরি শুকানোর কাজে ব্যবহার করছেন। এলাকাবাসী এ কালভার্টটিতে মাটি ভরাটের বিষয়ে বারবার এ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলেও তিনি কোন ব্যবস্থা করে দেননি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ তুলে করেন।
এলাকার বাসিন্দা ধনু মিয়া (৬০) বলেন, কালভার্টটি নির্মাণ হওয়ার পর যোগাযোগ ব্যবস্থার বেশ উন্নয়ন হবে বলে এমন ধারণা ছিলো। কিন্তু মাটি না ভড়াট করার কারণে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ১১ বছর ধরে দুর্ভোগেই যেন আমাদের নিত্যসঙ্গী। কালভার্টের এ দুর্ভোগের জন্য মসজিদ ও স্থানীয় বাজারে যাতায়াতে আমাদের কষ্টের যেন শেষ নেই।
এলাকার বাসিন্দারা আরও জানান, কালভার্টটি নির্মাণ হওয়ায় আমরা বেশ আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু এটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার ১১ বছর সময় পার হয়ে গেলেও দুই পারে মাটি বা রাস্তা না থাকায় কালভার্টটি সাধারণ মানুষের কোনো কাজেই আসছে না। প্রতিবারই নির্বাচন আসলে প্রার্থীরা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেন। ভোটের পর কেউ আর আমাদের খবর রাখে না। এ সময় কালভার্টটির দুপাশে মাটি ভরাট ও রাস্তা নির্মাণের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেন এলাকাবাসী।
এলাকার মিনি বেগম নামের এক গৃহবধূ জানান, কালভার্টের ওপর দিয়ে মানুষের চলাফেরা করাটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বেশির ভাগ মানুষ কালভার্টের এক পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। তাই কালভার্টের ওপর লাকরি (জ্বালানি) বা অন্য কিছু শুকানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এটির উভয় পাশে মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মান করলে স্থানীয়দের চলাচলের জন্য খুবই উপকার হবে।
স্থানীয় ৩ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত দুই বারের ইউপি সদস্য আমির হোসেন বলেন, ২০১১ সালে প্রথম সদস্য নির্বাচিত হয়ে পরের বছর অর্থাৎ ২০১২ সালে সরকারের ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এখানে একটি কালভার্ট নির্মাণ করি।
কালভার্ট নির্মাণের ১১ বছর পরও কেন মাটি ভরাট করেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশে পাশের মানুষ মাটি না দেওয়ায় তা সম্ভব হয়ে উঠেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিম জুড়ী ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রীকান্ত দাশ বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আগামীতে গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখা হবে আশ্বস্ত করেন।