ঢাকার ট্রাফিক সিস্টেমের দুরবস্থার জন্য কে দায়ী – পুলিশ,
চালক না পথচারী?
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রাস্তায় পুলিশী হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে এক ব্যক্তি তাঁর নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনায় নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা।
রাজধানী ঢাকা নগরীতে যানজট নতুন কোন বিষয় নয়। আর এই অসহনীয় যানজটের থেকে কিছুটা পরিত্রাণের জন্য রাইড শেয়ারিং অ্যাপে মোটর বাইকের ব্যবহার বেড়েছে ব্যাপকহারে।
কিন্তু এতে রাস্তার পরিস্থিতি আরও বিশৃঙ্খল হয়ে উঠেছে।
একদিকে রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অদক্ষতাসহ নানা অভিযোগ।
আর অন্যদিকে অভিযোগ রয়েছে যানবাহনের চালকদের অদক্ষতার এবং মানুষের আইন ভাঙার প্রবণতার।
কোনটা আসলে দায়ী সড়কের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য—এসব অভিযোগ নিয়ে রয়েছে হাজারও প্রশ্ন।
ব্যস্ত রাজধানীর মোড়ে মোড়ে বাইক
রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত সড়ক শাহবাগ মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, সেই মোড়ের সবক’টি রাস্তার মুখেই রাইড শেয়ারিং এর অসংখ্য মোটর বাইক দাঁড়িয়ে আছে যাত্রীর অপেক্ষায়।
সেইসাথে রাস্তাগুলোতে যানবাহনের ব্যাপক চাপে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।
রাস্তায় মোটর বাইকের চালকদের কয়েকজনের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান যে-
তারা যে আইন অমান্য করে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছেন কারণ মোটর বাইকের জন্য আলাদা কোন জায়গা বা স্ট্যান্ড না থাকা সহ নানা অভিযোগ তোলেন।
তাদের মধ্যে একজন মোটরবাইক চালক মোঃ জামিল খান বলেন, “আমাদের বাইক রাখার কোন স্ট্যান্ড নাই। আমরা যাত্রী নেব কোথা থেকে সেজন্য আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।
তিনি আরও বলেন যে, “আমরা যখন রাস্তায় দাঁড়াই দেখা যায় তখন, পুলিশ এসে দৌড়ানি দেয়, কেউ পালিয়ে যায় আবার কেউ যেতে পারে না। তখন পুলিশ গাড়ির চাবি নিয়ে কাগজপত্র চাইবে। আর কাগজপত্র দিলেই মেশিন টিপে মামলা দিয়ে দিবে।”
এ সপ্তাহেই গত সোমবার পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ কে কেন্দ্র করে শওকত আলী নামের এক ব্যক্তি ঢাকার বাড্ডা লিংক রোডে তাঁর নিজের মোটর বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা সারা দেশ জুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।
অফিস শুরুর সময় পিক আওয়ারে যখন শাহবাগ মোড়ে তীব্র যানজটের মধ্যে যাত্রীর অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা মোটর বাইক চালকদের কয়েকজনের সাথে কথা বলা হয় তখন তারা পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং চালকদের হয়রানি করার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
আর কারওয়ান বাজার মোড়ে বাইক চালকদের অভিযোগ নিয়ে কথা হয় সেখানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ইন্সপেক্টর আনোয়ার কবিরের সাথে।
তিনি বলেন যে, পুলিশের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ সঠিক নয়।
মি. কবির বাইকসহ যানবাহন চালকদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন আইন অমান্য করার।
তিনি আরও বলেন যে, “বাস-ট্রাক এবং প্রাইভেট কার থেকে মোটর সাইকেল পর্যন্ত সব ধরনের গাড়ির চালকরা একটু অসচেতন,”।
ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা মি. কবিরের বক্তব্য হচ্ছে, “রাইড শেয়ারিং এর সাথে এখন যারা আছে, তারা কিন্তু আগে কোন না কোন পেশায় ছিল। যে কোন কারণেই হোক-তারা আগের পেশা ছেড়ে রাইড শেয়ারিংয়ে এসে যোগ দিয়েছে।
“ফলে এখানে অদক্ষ চালক যেমন আছে, একইসাথে তারা অনেক সময় ট্রাফিক আইনকে আমান্য করে। তাদের ব্যাপারে আমরা যখন ব্যবস্থা নিতে যাই, তখনই এই অভিযোগগুলো উঠে আসে,” তিনি মন্তব্য করেন।