মোঃ মোশফিকুর ইসলাম, নীলফামারীঃ নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটির ১নং ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের কাঠালতলী গ্রামের নিরীহ লোকজনের নামে সফিকুল ইসলাম সাবু নামের এক ব্যক্তি একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়- পাবনা জেলার গোবিন্দা গ্রামের সফিকুল ইসলাম সাবু ২০০০ সালে চিলাহাটির কাঠালতলীতে সুবসতি নামে একটি এনজিও চালু করেন। কিছুদিন সোলার নিয়ে কার্যক্রম চালু থাকার পর বন্ধ হয়ে যায় এনজিওটির কার্যক্রম। এরপর থেকে সফিকুল ইসলাম সাবু ওই এলাকায় এনজিওটির নামে জমি ক্রয় করেন।
অভিযোগে জানা যায়- একজনের জমি অন্যের কাছ থেকে ক্রয়, অন্যের ক্রয় কৃত জমি পুনরায় ক্রয়,জোরপূর্বক জবর দখল সহ নানা অনিয়ম শুরু করেন তিনি। প্রকৃত জমির মালিকরা বাধা দিলে তাদের নামে হত্যার চেষ্টা, চুরি, চাঁদাবাজি ছিনতাইসহ ফৌজদারী মামলা দিয়ে হয়রানি করেন।
কাঠালতলী গ্রামের নুর ইসলাম, আলী আকবর, অহিদুল, সিরাজ আলি, শিরিন বেগম ,আমির হোসেন, রুবেল ইসলাম জানান- তাদের বিরুদ্ধে সফিকুল ইসলাম সাবু ১০-১২টি মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। সব মামলার বাদী সফিকুল ইসলাম সাবু। আমিনুল ইসলাম, ইনসান আলী, জামরুল ফকির, আবদুল ছাত্তার এই ৪ ব্যক্তি সবগুলো মামলার সাক্ষী।
কাঠালতলী বাদাম বিক্রেতা সিরাজ আলী জানান- আমার জমি জোরপূর্বক দখল করার পাঁয়তারা করে আসছেন সাবু। প্রতিবাদ করলে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেন সফিকুল ইসলাম সাবু । প্রায় প্রতি মাসে এখন আমাকে আদালতে এই মামলার হাজিরা দিতে হয়। সিরাজ বলেন-গত ১৬ সেপ্টেম্বর একটি মামলার হাজিরা দিতে হয়েছে। হাজিরার দিন আমার বাদাম বিক্রি বন্ধ থাকে। সেদিন পরিবারের লোকজন নিয়ে আমাকে না খেয়ে থাকতে হয়।
কাঠালতলী গ্রামের নুর ইসলাম জানান- সাবু ২০ দাগে ১১.৫০ একর জমি চলতি বছরের ৭ জুন ঢাকা গুলশানের সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। দেবিগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত জমির দলিল নং ২৬৪৯/২১। তিনি বলেন ১১.৫০ একর জমির মধ্যে সাবুর জমি প্রায় ৪ একর। বাকি জমি গুলো অন্যের। যা নিজ নিজ মালিকদের দখলে রয়েছে। সেই জমি গুলো সাবু বিক্রি করে দেন। তিনি আরো বলেন- দীর্ঘদিন ধরে সাবু এলাকার নিরীহ মানুষদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। তার মামলার কারনে কাঠালতলীর ৯-১০ টি পরিবার আজ সর্বস্বান্ত। ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোগডাবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান এর উপস্থিতিতে এক সালিশ বৈঠকে সাবু স্থানীয় আর কোন ব্যক্তির সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ করবে না মর্মে অঙ্গীকার করেন। কিন্তু এর পরও তিনি একের পর এক জমিজমা নিয়ে বিরোধ ও মামলা করে আসছেন।
সফিকুল ইসলাম সাবু কথাও এনজিও সুবসতির সভাপতি, কথাও ম্যানেজার আবার কোথাও প্রতিষ্ঠানের কিছুই নন বলে থাকেন। আসলেই তিনি এই এনজিওর কি তা এলাকাবাসী এখনো জানেনা। (১৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে কাঠালতলীতে সুবসতির অফিসে গিয়ে দেখা যায় অফিসটি তালাবদ্ধ,আর অফিসের চারদিকে ময়লা আবর্জনা জমে আছে। দীর্ঘদিন থেকে অফিস খোলা হয়নি এমত অবস্থায় পড়ে আছে।
এলাকাবাসী জানান- দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে সুবসতির অফিসটি। অফিসে দেখা-শোনার দায়িত্বে রয়েছেন আবদুস সাত্তার নামের আগে স্থানীয় ব্যক্তি। সে বলে অফিস দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আর সফিকুল স্যার মাঝে মাঝে আসেন জমিজমা দেখতে।
এ ব্যাপারে সফিকুল ইসলাম সাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন।