সাহিত্য ডেস্কঃ বাংলা ভাষার সাহিত্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকী আজ ১৫ সেপ্টেম্বর (বুধবার)। ১৮৭৬ সালের এই দিনে হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার কারণে তিনি অপরাজেয় কথাশিল্পী নামেও খ্যাত। শরৎচন্দ্রের অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোয় অনূদিত হয়েছে।
ঔপন্যাসিক শরৎচন্দ্র পাঁচ বছর বয়সকালে মতিলাল দেবানন্দপুরের প্যারী পণ্ডিতের পাঠশালায় ভর্তি হন, যেখানে তিনি দু-তিন বছর শিক্ষালাভ করেন। তেজনারায়ণ জুবিলি কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৮৯৪ সালে দ্বিতীয় বিভাগে এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করেন তিনি। কলেজ ত্যাগ করার পর শরৎচন্দ্র ভাগলপুর শহরের আদমপুর ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে খেলাধুলা ও অভিনয় করে সময় কাটাতে শুরু করেন। ১৯০৩ সালের জানুয়ারি মাসে রেঙ্গুনে লালমোহন গঙ্গোপাধ্যায়ের ভগ্নিপতি উকিল অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে চলে যান। অঘোরনাথ তাকে বর্মা রেলওয়ের অডিট অফিসে একটি অস্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। ১৯০৬ সালের এপ্রিল মাসে বর্মার পাবলিক ওয়ার্কস অ্যাকাউন্টস অফিসের ডেপুটি একজামিনার মণীন্দ্রনাথ মিত্রের সাহায্যে শরৎচন্দ্র রেঙ্গুনে এই অফিসে চাকরি পান ও পরবর্তী ১০ বছর এই চাকরি করেন।
তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলো হলো- বড়দিদি, পল্লীসমাজ, দেবদাস, চরিত্রহীন, শ্রীকান্ত, দত্তা, গৃহদাহ, পথের দাবী, পরিণীতা, নিষ্কৃতি, শেষ প্রশ্ন এবং শেষের পরিচয়। উপন্যাসের পাশাপাশি নাটকও লিখেছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ষোড়শী, রমা, বিরাজ বউ ও বিজয়া।
তার সাহিত্যকর্মকে ঘিরে ভারতীয় উপমহাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০টি চলচ্চিত্র বিভিন্ন ভাষায় তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে ‘দেবদাস’ উপন্যাসটি বাংলা, হিন্দি এবং তেলেগু ভাষায় আটটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান। এছাড়াও তিনি ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ‘ডিলিট’ উপাধি পান। তিনি ১৯৩৮ সালের ১৬ জানুয়ারি কলিকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।