ডিবিএন ডেস্কঃ দেশে নিবন্ধিত ৯২টি ছাড়া অননুমোদিত ও অনিবন্ধিত সব নিউজ পোর্টাল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৭ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও তথ্য সচিবকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন দুই রিটকারী আইনজীবী জারিন রহমান ও রাশিদা চৌধুরী নীলু।
এ বিষয়ে রাশিদা চৌধুরী নীলু গণমাধ্যমকে জানান, অনেক সময় ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়। এসব খবর মূলত অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল, ফেসবুক পেজে দেখা যায়। এসব ঘটনা অহরহ ঘটছে। এতে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এসব যুক্তিতে রিটটি করা হলে আদালত ওই রুল দেন। আজ শুনানি শেষে আদালত ৭ দিনের মধ্যে অনিবন্ধিত পোর্টাল বন্ধের নির্দেশ দেন।
এদিনই ঢাকা থেকে প্রকাশিত ৯টি বাংলা দৈনিক এবং একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার ঘোষণাপত্র (ডিক্লারেশন) বাতিলের ঘোষণা করেছে সরকার। ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে গত বুধবার দৈনিকগুলোর ঘোষণাপত্র বাতিল করা হয়, যা মঙ্গলবার এক তথ্য বিবরণীতে জানিয়েছে তথ্য অধিদপ্তর।
ঘোষণাপত্রে বাতিল করা দৈনিকগুলোর নাম হল: গণ আওয়াজ, দৈনিক জনসেবা, ঢাকা প্রকাশ, জাতির কণ্ঠ, কিষাণ, এই দেশ এই দিন, পূর্ব আলো, সময়ের পাতা ও রিপোর্টার এবং দ্য ফাইনান্সিয়াল ডেইলি।
এর আগে গত ১৬ আগস্ট অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল কেন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হবে না এ মর্মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। তার দুই দিন আগে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী রিট করেন।
গত ৫ মে সংবেদনশীল সংবাদসহ যে কোনো খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যমগুলোর জন্য ‘নৈতিক নীতিমালা’ প্রণয়ন চেয়ে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ প্রেরণ করা হয়। তবে সে নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী জারিন রহমান ও রাশিদা চৌধুরী নীলু।
রিট আবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি রাজধানীতে ২১ বছরের এক মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দণ্ডবিধি আইনের ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোর মধ্যে বিশেষ করে অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতে অগ্রহণযোগ্যভাবে নিউজ পরিবেশন করা হয়েছে। অথচ এসব সংবাদ পরিবেশনা বন্ধে বিটিআরসি কিংবা প্রেস কাউন্সিল কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে নৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে দেশে অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টালগুলো চালু থাকার পরও বিটিআরসি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই এসব পোর্টালের রেজিস্ট্রেশনও জরুরি।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ‘ন্যাশনাল অনলাইন মাস মিডিয়া পলিসি-২০১৭’ অনুযায়ী দেশে অননুমোদিত ও অরেজিস্ট্রিকৃত অনলাইন মিডিয়াগুলো কেন বন্ধ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।