তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ ও মৌখিক আপত্তি উপেক্ষা করে রাতের আধারে সরকারি রাস্তার ভুমি দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহষ্পতিবার (২৬ আগষ্ট) সকালে এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পরে পুলিশ প্রাচীর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়ে, মুচলেকা আদায় ও নির্মাণ সামগ্রী জব্দ করে তা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় হস্তান্তর করেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সুজানগর ইউপি উত্তর বাঘমারা গ্রামে।
অভিযোগ সুত্র ও সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার সুজানগর ইউপির উত্তর বাঘমারা ও নাজিরখাঁ গ্রামের কয়েক হাজার জনসাধারণের যাতায়াত রাস্তার বাঘমারা কালাচাঁদ বাড়ির নিকটবর্তী ব্রিজের সংযোগস্থলের সরকারি রাস্তার পার্শ্ববর্তী ভুমির মালিক হারিছ আলী, আখলিছ আলী লয়াই, আপ্তাব আলী, ছাদ উদ্দিন প্রমূখ। তাদের বসতবাড়ির সম্মুখের সরকারি রাস্তার পশ্চিমাংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের প্রস্তুতি নেন। নির্মাণ সামগ্রী মজুত ও ইটসলিং রাস্তা সংলগ্ন ভুমি দখল করে পিলার স্থাপনের গর্ত খুড়া দেখে গ্রামবাসী তাদেরকে আপত্তি জানান। এরপরও তারা সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু করলে ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। বুধবার রাতের আধারে হারিছ আলী গং প্রাচীর নির্মাণের কাজ চালিয়ে যায়। রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু থানা পুলিশের বাধা অমান্য করে ভোরবেলা তারা বেইজ ঢালাই ও কয়েকটি পিলার নির্মাণ করেছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এরপর সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সামগ্রী জব্দ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় দিয়েছে। ভুক্তভোগী মনির উদ্দিন, সাবেক ইউপি মেম্বার চেরাগ উদ্দিন, আব্দুল বাছিত, খলিলুর রহমান, বোরহান উদ্দিন, জয়নাল উদ্দিন, ছালমান আহমদ, মাহবুবুর রহমান প্রমূখ অভিযোগ করেন, উত্তর বাঘমারা ও নাজির খাঁ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ সরকারি এ ইটসলিং রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। রাস্তাটি হারিছ আলী, আখলিছ আলী লয়াই, আপ্তাব আলী, ছাদ উদ্দিন গংদের বাড়ির সম্মুখে হওয়ায় জোরপূর্বক তারা রাস্তার ভুমি দখল করলে পাকার দেওয়াল নির্মাণ করতে মালামাল মজুত ও গর্ত করা দেখে আমরা তাদেরকে বাধা দেই। না মানায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশের বাধা নিষেধ সত্ত্বেও রাতের আধারে প্রাচীর নির্মাণের কাজ চালিয়ে যায়। রাস্তার ভুমি দখল করে প্রাচীর নির্মাণ করা হলে দুই গ্রামের মানুষের যাতায়াতে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হবে।
থানার তদন্ত অফিসার সুব্রত কুমার দাস জানান, অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি সার্ভেয়ারের মাধ্যমে রাস্তার সীমানা নির্ধারণ ব্যতিত প্রাচীর নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেন। তা উপেক্ষা করে বুধবার রাতের আধারে হারিছ আলী গংরা নির্মাণ কাজ শুরু করলে তিনি গিয়ে পূণরায় বাধা দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশের বাধানিষেধ অগ্রাহ্য করে ভোরবেলা তারা বেইজ ঢালাই ও পিলার নির্মাণ করেছে। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ নিয়ে তিনি কাজ বন্ধ করেন। অভিযুক্তদের মুচলেকা গ্রহণ ও নির্মাণ সামগ্রী জব্দ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নছিব আলীর জিম্মায় দিয়েছেন।
অভিযুক্ত হারিছ আলী, আখলিছ আলী লয়াই, আপ্তাব আলী, ছাদ উদ্দিন পুলিশের হস্তক্ষেপে কাজ বন্ধ ও নির্মাণ সামগ্রী জব্দের সত্যতা স্বীকার করে জানান, তারা নিজেদের ভুমিতে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এতে গ্রামের কয়েকজন বাঁধা সৃষ্টি করেন। বিষয়টির নিষ্পত্তির আগেই এভাবে দেয়াল নির্মাণের কাজ চালানো তাদের ঠিক হয়নি।