তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: জমি মালিকানার দাবিতে এরঐ বিরোধের জেরে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউপি জামসির হরিনাকান্দি গ্রামে একই পরিবারের চার জনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাতের আঙুল দ্বিখণ্ডিতসহ চারজনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়েছে। ঐই ঘটনায় মামলা দায়ের করে দুলাল মিয়া। ঘটনার ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন অবধি কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি। এদিকে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আহত ও সাথে আহাজারি পরিবারের।
গত শনিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে স্থানীয় নূরুল ইসলাম ,জহির উদ্দিনসহ তাদের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের দল পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের হামলায় মারাত্মক আহত হন আপন তিন ভাই মিনার মিয়া (৪০) ,জয়নাল মিয়া (৪৩) ,কামাল মিয়া (৪৫) ভাতিজা শাহিদ মিয়া (২৭) রেমিট্যান্স যুদ্ধা। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাৎক্ষণিক শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন, কিন্তু পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকরা গুরুতর আহত দুই জনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে এবং অপর দুই জনকে মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করেন।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন নূরুল ইসলাম ও তার সঙ্গীরা জমিতে গিয়ে আধা শতক জমির মালিকানা দাবি করে আব্দুল বাছিত আলাই মিয়ার ভাই জয়নাল মিয়ার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে । একপর্যায়ে নুরুল ইসলাম ও জহির উদ্দিন কোমর থেকে ধারালো দেশীয় অস্ত্র দা, চাপাতি বের করে জয়নালকে কোপাতে থাকে। এদিকে তাদের অস্ত্রের আঘাত থেকে ভাইকে বাঁচাতে তার অপর দুই ভাই ও ভাতিজা এগিয়ে আসলে তাদেরও ধারালো অস্ত্র দিয়ে একই কায়দায় কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যায়। এতে একজনের হাতের আঙুল ঘটনাস্থলেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ধারালো অস্ত্রের কোপে রক্তক্ষরণ হওয়ায় চারজনই জ্ঞান হারিয়ে ফেললে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ঘটনার ২ দিন পর গত ৯ আগষ্ট উক্ত হামলায় আহত শাহিদের পিতা এবং অপর তিনজন আহতদের ভাই দুলাল মিয়া বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তবে ঘটনার ১১ দিন পার হলেও রহস্যজনক কারণে আজ পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষিপ্ত ভুক্তভোগীসহ স্থানীয়রা ও আতঙ্কিত।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জহির উদ্দিনের সঙ্গে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। অভিযুক্ত নুরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার জন্য ফোনে এবং বাড়িতে একাধিকবার গিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকির জানায়, সামান্য এক টুকরো জমির ভেজালকে কেন্দ্র করে চার জনকে খুব নৃশংসভাবে কোপানো হয়েছে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে একজনের হাতের আঙুল।
ঘটনার ১১ দিন পার হয়ে গেলেও আসামি গ্রেফতার হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসামি গ্রেফতারের সর্বোচ্চ
চেষ্টা আমরা করছি । দ্রুতই এই অমানুষগুলোকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালিক(দুলাল) আজকের দর্পনকে বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আসামিদের গ্রেফতার করা হবে । তাদের গ্রেফতারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। হামলায় আহত চার জনই বর্তমানে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আতঙ্কিত জীবন যাপন করছে।