ঈদের আগেই শতর্ক করা হয়েছিল কঠিন লক ডাউন আসছে। কারনটিও যথার্থ। সংক্রমনের অবস্থা তখন উর্ধমূখী। মানুষ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাড়ী গেছে ঈদ করতে। ফেরী ঘাটে ভির জমে ছিল বাড়ীফেরা মানুষের। অনেকের মূখেই মাস্ক দেখা যায়নি। পশুর হাটের চিত্র ছিল আরও ভয়ানক। তাই গতকাল ছিল করোনায় মৃতের সংখাটি সর্ব্বোচ্চ ২৫৮ জন। বহু মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এখন চিকিৎসাধীন। ঘরেও চিকিৎসা নিচ্ছে অনেকে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অবস্থাটিও দিল্লির মত হয়ে পরবে। করোনার কোন অসুধ আবিস্কার হয়নি। যে সব দেশ বা শহর করোনা সংক্রমন নিয়ন্ত্রন করতে পেরেছে, তারা একটা ব্যবস্থাই নিয়েছিল ” মাস্ক এবং দুরত্ব” নিশ্চিত করা। গনমাধ্যমে নিত্য মৃত্যু সংবাদ দেখেও বাংলাদেশের মানুষ সচেতন হয়নি। গুরত্ব দেয়নি অনেকে। বরং লক ডাউন নিয়ে ব্যঙ্গ করছে। আবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে জায়গা না পেলে সরকারের ব্যর্থতা বলে চিৎকার করেছে। আসলে করোনাকে মোকাবেলা করা এককভাবে সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। জনগনের সহযোগিতা প্রয়োজন। দেশের মানুষ যত আগে বিষয়টি অনুধাবন করবে ততই মঙ্গল। নাহয় এই সংক্রমন মহামারির রূপ নিবে। মানুষ সচেতনতা না হলে লক ডাউন দিয়ে বা মেয়াদ বৃদ্ধি করে সংক্রমন রোধ করা যাবেনা। ব্যবসা বানিজ্যও স্বাভাবিক হবেনা। ভুলটি শুধু জনগনের নয় নেতারা বিভ্রান্ত করেছে মানুষকে।
অনেক উন্নত দেশের আগে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন এসেছে। সেই ভ্যাকসিন নিয়ে নেতারা মিথ্যা আর ভুল মেসেজ দিয়েছে জনগণকে। কেউ বলেছেন হাস মুরগীর ভ্যাকসিন । আবার কেউ বলেছেন মানুষ মারার ভ্যাকসিন। এককজন প্রতিজ্ঞা করেছেন মরে গেলেও তিনি এই ভ্যাকসিন গ্রহন করবেননা। মানুষ নেতাদের কথায় ভ্যাকসিনে নিরুৎসাহীত হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেছে। পরে দেখা গেল এই নেতারাই ভ্যাকসিন নিয়ে ছবি পোষ্ট করেছে গনমাধ্যমে। যিনি মরে গেলেও এই ভ্যাকসিন নিবোনা বলেছেন তিনিও চুপিসারে ভ্যাকসিন নিয়ে নিরাপদ ভাবছেন নিজেকে। এখন মানুষ রেজেষ্ট্রেশন করছে ভ্যাকসিনের জন্য। নেতাদের মিথ্যাচারে বিশ্বাস করে স্বজন হারিয়েছেন অনেকে। তাই অপেক্ষার লাইন এখন দীর্ঘ হচ্ছে যৌক্তিক করনে। নেতারা এখন আবার বলছেন সরকার বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন আনতে ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারে উদ্যোগকে সহায়তা করলে জনগন বিভ্রান্ত হতনা। এভাবে করোনা সংক্রমন বিস্তার হতনা। এই মিথ্যাচারের কারনেই এখনো ভ্যাকসিন নিয়ে দেশের মানুষের মনে ভয় কাজ করছে। কিন্তু যারা এই মিথ্যাচার করেছেন তারা ভ্যাকসিন নিয়ে সঙ্কামুক্ত হয়েগেছেন। প্রতিনিয়ত সরকার পরিবর্তনের দাবী করে জনগনকে ভুল পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের বক্তৃতা বিবৃতি আর্কাইভে রয়েগেছে। যারা প্রতিদিন ভ্যাকসিন নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। জনগনকে নিরুৎসাহিত করেছেন, তারা এই মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেননা। করোনা সংক্রমন আর ভ্যাকসিন নিয়ে নেতাদের মিথ্যাচার মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। নেতারা এই মিথ্যা প্রচারের না করলে মানুষ সচেতন হত আগেই। এভাবে সংক্রমন ছড়াতে পারতনা। শুধু মিথ্যাচারই করেনি এই নেতারা, জনগনের নেতা হিসাবে করোনা মোকাবেলায় কোন ভূমিকাও পালন করেনি। করোনা এখন জাতীয় দুর্যোগ হয়ে এসেছে। নেতা হিসাবে জনগন এবং দেশ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার রজনৈতিক অঙ্গিকার প্রত্যাশীত ছিল। কিন্তু নেতারা করোনাকে পুজি করে সরকার হটানোর ষরযন্ত্র করেছে। কেন তাহলে মানুষ হত্যার দায়ে এই নেতাদের বিচার হবেনা?
আজিজুর রহমান প্রিন্স,
কলামিস্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।