হেলেনা জাহাঙ্গীর এবং চাকুরীজিবী লীগ নিয়ে তুমুল হৈচৈ হচ্ছে গনমাধ্যমে। হেলেনা জাহাঙ্গীর লাইভে এসে কান্নাকাটি করে নির্দোষ প্রমানের চেষ্টা করেছে। দাবী করেছে দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি বহু প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। এখন অনেকেই প্রশ্ন করছেন হেলেনা কোন যোগ্যতায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় মহিলা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য হলেন। কোন বিবেচনায় হেলানাকে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করেছে এবং কারা করেছে! নিয়ম হল দলের এবং অঙ্গ সংগঠনের মধ্য থেকে ধাপে ধাপে মূল দলে নিয়ে আসা। এমন অনেক ত্যগী নেতা-কর্মী দীর্ঘদিন ধরে এই কমিটিতে আসার জন্য অপেক্ষা করছে। তাদেরকে উপেক্ষা করে হেলেনাকে দলের উপ কমিটির সদস্য করার রহস্যটি উদঘাটন হওয়া দরকার। উপ কমিটির সদস্যা হয়েই হেলেনা জাহাঙ্গীর যে কাজটি করেছে তা কোন ত্যগী নেতা-কর্মী কখনোই করবেনা। দলের নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে চাকুরীজিবী লীগের সভাপতি বনে গেছে হেলেনা। এখন কান্নাকাটি করে যতই বলুক সে জেনে শুনেই নেতা হওয়ার চেষ্টা করেছে। হেলেনার উপর কারও আশির্বাদ থাকতে পারে কিন্তু, দলের জন্য এই ধৃষ্ঠতা ক্ষমার অযোগ্য। এমন বহু হেলেনা আছে যারা দাপট দেখাচ্ছে দলে। আগামি নির্বাচনের আগে এই সব নেতাদের নির্মুল করতে না পারলে দলের ক্ষতি হবে।
হেলেনা জাহাঙ্গীরের আলোচনা শেষ না হতেই নতুন করে আলোচনায় এসেছে ভিকারুননেসা নুন স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপ্যাল কামরুন নাহার। তার একটি ফোনালাপের অডিও ভাইরাল হয়েছে গনমাধ্যমে। দেশের স্বনামধন্য বিদ্যাপিঠের একজন সম্মানীত প্রিন্সিপ্যাল যে ভাষায় কথা বলেছেন তা বিশ্বাস করা যায়না। বস্তির মেয়েরা যে ভাষায় কথা বলে সে ভাষায় সেভাবেই গালাগালি করেছেন এই প্রিন্সিপ্যাল। শুধু প্রিন্সিপ্যাল নয় একজন ভদ্র নারীর পক্ষেও এমন অশ্রাব্য গাল দেওয়া সম্ভব নয়। এক পর্যায়ে বলেছেন “আমি পিস্তল বালিশের নীচে রেখে ঘুমানো মেয়ে। আমার বিরুদ্ধে কেউ লাগলে তাকে আমি স্কুল নয় দেশ ছাড়া করবো”। রাস্তায় কাপড় খুলে পিটাবো। গালাগালি শুনে কান গরম হয়ে গেছে শ্রোতাদের। ভদ্র পরিবেশে এই ভাষা উচ্চারন করাও সম্ভব নয়। এমন শিক্ষকদের কাছে শিক্ষার্তীরা কি শিখবে? কেন এই স্কুলে মেয়ে পাঠাবে অভিবাবিকরা। অনেকেরই ব্যক্তি চরিত্র আছে কিন্তু এমন পদে বসে অশ্রাব্য গালিগালাজ অমার্জনীয় অপরাধ। বিপদটি হল এই প্রিন্সিপ্যাল দলের সংশ্লিষ্ঠতার কথা বলেছেন টেলিফোনে।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ব্যপক উন্নয়ন করেছে। দেশ এখন উন্নত দেশের কাতারে স্থান পেতে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু ব্যক্তি এবং তাদের আচার আচরন দলকে ক্ষতিগ্রস্থ্য করছে। এদের ব্যক্তিগত আচরনের দায় সরকারের নয় কিন্তু, বিরোধীরা এটাকেই পুজি করে প্রচারনায় নামবে। এই মুহুর্তে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার মত কোন ইস্যু নেই বিরোধী দলের কাছে। দলের নেতা কর্মীদের অপকর্ম সরকারের সকল কৃতত্বকে ম্লান করে দিচ্ছে। নেতারা প্রায়ই ” হাই ব্রিড” ” কাউয়া বলে বক্তৃতা করেন। এদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারী উচ্চারন করেন। কিন্তু নেতাদের আশির্বাদেই এরা দলে শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে। কাউয়ারাই নেতা-কর্মীদের এখন সাবধান করে দলে। প্রত্যান্ত অঞ্চলের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও হঠাৎ দলে ঢোকা নেতাদের দাপটে ত্যগী কর্মীরা এখন কোঠাসা হয়ে পরেছে। কতজন হেলেনা দল থেকে বহিস্কার হয়েছে জানিনা। এসব ভুইফোড় নেতাদের নির্মুল করা নাগেলে আগামি নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে দলে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রিয় কমিটিতে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। বিষয়টি ভাবনার বটে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স,
কলামিস্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।