তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ জনসাধারণের সাথে প্রতারণার অপরাধে পুলিশ আটক করে প্রতারককে। কিন্তু এবার মৌলভীবাজারে দেখা গেলো পুলিশের বেশে প্রতারণা, তাও পুলিশের সাথেই।
মৌলভীবাজারে পুলিশ কর্মকর্তাদের ফোন করে এক প্রতারক চক্র ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ইত্যাদির সদস্য পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করে। সেই প্রতারক চক্রের মূলহোতা জাকির হোসেনকে (২৭) গ্রেফতার করেছে মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গেল বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন থেকে মৌলভীবাজার জেলার সদর মডেল থানা, শ্রীমঙ্গল থানা ও জেলা ডিবির ডিউটি অফিসারসহ কয়েকজন অফিসারের মোবাইলে ডিবি পুলিশ, পিবিআই ও দুদক পরিচয়ে বেশ কয়েকটি ফোন আসে এবং চাঁদা দাবি করা হয়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে সাধারণ ডায়েরিভুক্ত (জিডি) করা হয়। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়ার নির্দেশে মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে তৎপরতা শুরু করে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সিলেট, যাত্রাবাড়ি, কুমিল্লা, সাতক্ষীরা, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ৭০টিরও বেশি থানা থেকে জানতে পারে যে, বিভিন্ন মামলার আসামীদের তথ্য সংগ্রহ করে তাদের আত্মীয়-স্বজনের মোবাইল নাম্বারে বিভিন্ন থানার অফিসার পরিচয়ে সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আদায় করে নেয় এই প্রতারক চক্র।
মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখা এসমস্ত ঘটনার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে প্রতারকের অবস্থান নিশ্চিত হয়। এর ধারাবাহিকতায়, মৌলভীবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের একটি আভিযানিক দল ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ বদিউজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর এলাকা থেকে এই প্রতারক চক্রের মূলহোতা জাকিরকে গ্রেফতার করে। এসময় তাঁর কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১৭ টি সিম ও ৭ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকির প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ আরও জানায়, গ্রেফতার জাকিরের নামে মাদক ও প্রতারণার মোট ৯ টি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও এই চক্রের সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত চলমান আছে।