সারা দেশেই লক ডাউন চলছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিন দিন ধরে বৃষ্টি আর লক ডাউনের কারনে গৃহে বন্দি হয়ে পরেছে সবাই। আজ এক জরুরী কাজে গাজীপুর যেতে হয়েছিল। আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের রাস্তাটি ট্রাকের কারনে জ্যাম থাকে। এই পথটুকু পারি দিতে হয় ভোরে। আমরাও খুব ভোরেই রওনা হয়েছি। সরকারী দপ্তরের চিঠি সহ প্রয়োজনিয় সব কাগজপত্রও সংগে নিয়েছি। পথে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত দুইবার চেক পোষ্টে থামিয়েছে এবং জিঙ্গেস করে যেতে অনুমুতি দিয়েছে। উত্তরা থেকেই শুরু হয়েছে ট্রাফিক জ্যাম। কিছুতেই এগুনো যাচ্ছেনা। অনেক্ষন পর যখন চেক পোষ্টে পৌছালাম আবার চেকিং হল। এবারও পার পেয়ে গেলাম। উত্তরার পর থেকেই শুরু হল লম্বা লাইন আর ভাঙ্গা রাস্তা। চলেছি কাছিমের গতীতে। আজ রাস্তায় ট্রাক নেই।পুলিশ গাড়ী আটকে দিয়ে জ্যাম বাঁধিয়েছে। পুলিশ কারও কোন কথাই শুনতে চাইছেনা। বাধ্য হয়েই পুলিশের নির্দেশে মেনে ফেরৎ চলে এসেছি। কিন্তু ফেরার পথে এয়ারপোর্টের কাছাকাছি পুলিশ হাত উঁচিয়ে নির্দেশ দিল গাড়ী সাইড করতে। লক ডাউন দেওয়া হয়েছে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিৎ করতে। মাস্ক ছাড়া বেরিয়েছি কিনা তা পরীক্ষা করতে। যে উদ্দেশ্যে বেড়িয়েছি তার সত্যতা পরীক্ষা করাও পুলিশেরই কাজ৷ কিন্তু পুলিশ রাস্তার সাইডে গাড়ী দাঁড় করিয়ে টাকা আদায় করছে। না হয় মামলা দিচ্ছে ট্রাফিক আইনে। কয়েকজনকে এ নিয়ে প্রতিবাদও করতে দেখেছি। একটি টেলিভিশন ক্যামেরা শুট করছে দেখে আমরা রক্ষা পেলাম।
লক ডাউনের অযুহাতে রাস্তায় এখন ঘুষের উৎসব চলছে পুলিশের। সামাজিক দুরত্ব রক্ষা হচ্ছেনা রাস্তায়। মাক্সবিহীন পথচারি চলাচল আগের মতই অব্যহত রয়েছে। ইটের ট্রাকে বসে মাক্স বিহীন যাত্রী বহনের দৃশ্যও দেখেছি। কিন্তু পুলিশের দৃষ্টি কেবল গাড়ীর উপর সঙ্গত কারনেই। রাস্তায় মাক্সবিহীন কাউকে শতর্ক করতে দেখিনি। তাহলে এই লক ডাউনের গুরত্ব কতটুকু রক্ষা হল? বেড়িগেট দিয়ে রাস্তায় চেকপোষ্ট বসালেইকি করোনা মুক্ত হয়ে যাবে দেশ? অনেক জায়গায় মিলিটারিও নেমেছে তবে তাদের ভদ্র ব্যবহার লক্ষ্য করেছি। রাস্তার চিত্র দেখে লক ডাউনের উদ্দেশ্যটি কার্যকর হচ্ছে মনে হয়নি। জরুরী কাজে যেতে পারিনি তাতে দুঃখ নেই। কিন্তু পুলিশ জনগনকে লক ডাউনের উদ্দেশ্যটি বোঝাতে পেরেছে মনে হয়নি। জনগনকে করোনার সঙ্কাটি বোঝানের বদলে অশোভন আচরন করছে। মানূষকে সচেতন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে সংক্রমন রোধ করা সম্ভব হবে। না হয় লক ডাউন দিয়েও ভাল কোন ফল বয়ে আনবে মনে হয়না। জনগন সরকারের নির্দেশ মেনে ঘরে রয়েছে। আমরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই জরুরী প্রয়োজনে বেড়িয়ে ছিলাম। পুলিশের নির্দেশ মেনে চলে এসেছি। কিন্তু পুলিশের ভূমিকা দেখে লক ডাউন নিয়ে অন্যদের মত আমিও ক্ষুদ্ধ হয়েছি। সংশ্লিষ্ঠ কর্তিপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করবে আশাকরি।
আজিজুর রহমান প্রিন্স,
কলামিস্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।