দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাই বলে দেয় দেশটির উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশের সব ক’টি যোগাযোগ মাধ্যম রুগ্ন হয়ে পরেছে। এমন নয় যে মানুষ চড়তে চায়না বা ভাড়া দেয়না। বরং টিকিট পাওয়া যায়না রেল কিংবা বিমানে। বাসে চড়তে হয় গাদাগাদি করে। কিন্তু অব্যবস্থাপনা আর দুর্নীতির কারনে এই খাতের প্রতিটি শাখায় লোকসান হয় প্রতি বছর। লোকসানী প্রতিষ্ঠানগুলিকে লাভজনক করাই এখন এক মাত্র করনীয়। স্বাধীনতার পর থেকে যোগাযোগ মাধ্যমে (রেল, বিমান, সড়ক এবং নদী) শুধু লোকসানই গুনতে হচ্ছে। আমাদের দেশে খনিজ সম্পদ নেই। সীমিত রপ্তানী আর স্থানীয় উৎপাদনই রাজস্ব দেয়। বিদেশে গরীব শ্রমীকদের প্রেরিত রেমিটেন্স এখন বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ বাড়ায়। কিন্তু দেশীয় উৎপাদন খাত ঘুষ, দুর্নীতি আর অপচয় করে বিনষ্ট করে। সজ্ঞবদ্ধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দুর্নীতিকে বৈধতা দিয়েছে। প্রকাশ্যেই নির্ধারীত অঙ্কের ঘুষ না কাজ পাওয়া বা কাজ দেওয়া অনিয়ম হয়েগেছে। নিয়ম হয়েছে ঘুষ দিতেই হবে যতই ক্ষমতাশালী হউন। দেশের রাজস্ব উৎপাদনের সিংহ ভাগই ভাগ- বাটোয়ারা করে লুটে নেয় লুটেরা। তারাই আবার ন্যয় নীতির কথা বলে বক্তৃতা দেয় সভা করে। দেশের বেশীর ভাগ সম্পদের মালীক এখন সরকারী কর্মচারী আর আমলা। আর যারা মালীক হয়েছেন তাদের উৎসটিও স্বচ্ছনা৷ হিসাবটি করতে পন্ডিত কিংবা অঙ্ক বিশারদ হওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই দুর্নীতি দমন কমিশনও দুর্নীতিমুক্ত না।
ইউরোপ আমেরিকার শহরের বাস সার্ভিস পরিচালিত হয় সরকারের অধীনে। সেখানেও ইউনিয়ন আছে ইউনিয়নের নামে প্রতিষ্ঠানের লোকসান হয়না। প্রায়ই আন্দোলন হয়, বেতন বৃদ্ধি সহ নানা সুবিধা আদায় করতে। সার্ভিস বন্ধ করে জনগনকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়না। আমাদের দেশে জঘন্য অপরাধীকেও সাজা দিলে রাস্তাবন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। বিদেশ থেকে নতুন গাড়ী এনে দিলেও একবার গ্যরাজে গেলে সেই গাড়ী আর চেনা যায়না। সব বিক্রি হয়ে যায়।
বর্তমান সরকার ডিজিটাল নীতি ঘোষনা করেছে। ডিজিটাল পন্থায় দুর্নীতি নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। দেশীয় বিজ্ঞানীরাই পারে উপায় উদ্ভাবন করতে। হাস্যকর মনে হলেও এই পথেই পরিবর্তন সম্ভব। তা না হলে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবেনা। আর দুর্নীতি বন্ধ করা না গেলে দেশও উন্নত হবেনা যতই চেষ্টা হউক। দেশের রাজস্ব উৎপাদনের প্রতিটি খাতকে নিয়ন্ত্রনে আনতে হবে। বাসের সার্ভিস সহ যোগাযোগ খাতের প্রতিটি স্তরকে ঢেলে সাজাতে হবে। তবেই কেবল এই নৈরাজ্য দূর করা সম্ভব হবে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স,
কলামিস্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।