পুলওয়ামা হামলার পর থেকেই কাশ্মীরে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। হামলার পর জঙ্গিদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এরই জেরে রোববার কাশ্মীরে ফের জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওই সংঘর্ষে রাজ্য পুলিশের এক ডেপুটি সুপার ও সেনাবাহিনীর এক নন-কমিশন্ড অফিসার এবং জইশ-ই-মুহাম্মদের ৩ জঙ্গি নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন একজন সেনা কর্মকর্তা।
পুলওয়ামায় হামলার পর থেকেই একের পর এক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল কাশ্মীরে। শুক্রবার রাতে প্রায় ২০০ জন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা ছাড়াও অতিরিক্ত ১০০ কোম্পানি বাহিনী উপত্যকায় পাঠিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন কাশ্মীরবাসী।
কুলগামের তুরিগাম এলাকায় জঙ্গি গতিবিধির খবর পেয়ে অভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনী। সংঘর্ষের সময়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ২০১১ ব্যাচের জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ সার্ভিস অফিসার আমন কুমার ঠাকুর। জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন তিনি। নিহত হয়েছেন সেনার হাবিলদার সোমবীরও। আহত হন এক মেজরসহ দুই সেনা। সংঘর্ষে তিন জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি নিরাপত্তা বাহিনীর। তারা জানিয়েছে, ওই জঙ্গিরা জইশ-ই-মুহাম্মদের সদস্য।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি দিলবাগ সিংহের বক্তব্য, স্থানীয় বাসিন্দাদের মৃত্যু এড়াতে খুব সাবধানে অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা এক সাহসী অফিসারকে হারিয়েছি। কিন্তু কোনও স্থানীয় বাসিন্দার মৃত্যু হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, জম্মুর গোগলা জেলার বাসিন্দা বছর ৩০-র আমন দক্ষ ও সাহসী অফিসার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সমাজকল্যাণ দপ্তর ও সরকারি কলেজের শিক্ষকের চাকরি ছেড়ে পুলিশে যোগ দেন তিনি।
এদিকে শুক্রবার রাতের ধরপাকড়ের প্রতিবাদে এদিন উপত্যকায় হরতালের ডাক দিয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। সকাল থেকেই একেবারে সুনসান ছিল শ্রীনগরসহ কাশ্মীরের প্রায় সব বড় শহরের পথঘাট। বন্ধ ছিল দোকানপাট, অফিস। চলেনি সরকারি যানবাহনও। শ্রীনগরের পাঁচটি থানার অধীনে থাকা এলাকায় যাতায়াত ও জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
তবে ধরপাকড় থামেনি। জামাত-ই-ইসলামি-সহ অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের আরও বেশ কয়েক জন নেতাকে আটক করা হয়েছে।
সূত্র : আর টি ভি