মোঃলোকমান হোসেন,যশোর জেলা প্রতিনিধি:-যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণে বিষপানে মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যাচেষ্টার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষককে দায়ী করে ছাত্রী সুমী খাতুন(১৫)’র বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট ৩১ ডিসেম্বরের লিখিত অভিযোগের দীর্ঘ সময় পার করে অবশেষে (রোববার ২৪ শে ফেব্রুয়ারি)দুপুরে তদন্ত করলেন তদন্ত কর্মকর্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডলের নিকট লিখিত অভিযোগটি দেওয়ার পর তিনি জরুরী তদন্ত করার নির্দেশ দেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে।কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্তে কালক্ষেপন করতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে চলতে থাকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা।
ইতোমধ্যে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলেয়া পারভীন ছাত্রী সুমী খাতুন মাদ্রাসায় ক্লাস করতে আসায় তাকে ক্লাসে ঢুকতে না দিয়ে ছাড়পত্র দিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন এবং উপজেলার বসতপুর মাদ্রাসার ইংরাজী প্রভাষক মুনছুর আলীসহ নিজ মাদ্রাসার আরও তিনজন শিক্ষককে ছাত্রী সুমীর বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন লিখিত অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য। এবং বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করে। যে কারনে নিরুপাই হয়ে পূণরায় উপজেলা নির্বাহীর নিকট আবারও একটি লিখিত অভিযোগ করেন ছাত্রী সুমির পিতাএবং অভিযোগের একটি অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকট পাঠানো হয়।
অভিযোগে জানা যায়,শার্শা উপজেলার নাভারণ মহিলা আলিম মাদ্রাসার দশম শ্রেনীর ছাত্রী সুমী খাতুন ও একই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক এস এম রিজাউল বকুল অনুমান ভিত্তিক বিভিন্ন কুরুচিপূর্ন কাল্পনিক কাহিনী তৈরী করে শ্রেনী কক্ষে ছাত্রীদের কাছে কটাক্ষ ভাবে বর্ণনা করাসহ বিভিন্নভাবে কৈফিয়ৎ তলব করা,অন্যান্য মেয়েদের সামনে তার সাথে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করা,বিভিন্ন ধরনের অপমানজনক কথা-বার্তা বলাসহ নানারকম আচরণ করার কারণে নিজকে অপমানিত বোধ করায় সোমবার মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরে অন্যদের অজান্তে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে বিষ নিয়ে সুমী নিজে বিষপানে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।কিন্তু তাৎক্ষনিক সুমীর বাড়ির লোকজন জানতে পেরে নাভারণ-বুরুজবাগান সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করায় এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যায়। তদন্তের সময় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,তদন্তকারী শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চৌধুরী হাফিজুর রহমান এক পক্ষীয় ভাবে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন।অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষের লোকদের নিকট থেকে সাফাই লিখিত প্রতিবেদন নিতে থাকে। এবং সেখানে উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে ছাত্রী সুমি বলেন,তদন্ত করতে আসলে সেখানে আমাকে কোন কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।বিষয়টি এক পক্ষের নিকট শোনা হয়েছে।শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ সঠিক আছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক এস এম রিজাউল বকুল বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নহে সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তদন্তকারী শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চৌধুরী হাফিজুর রহমান জানান,মাদ্রাসার দশম শ্রেনীর ছাত্রী সুমী খাতুন ও একই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক এস এম রিজাউল বকুলের পৃথক পৃথক ভাবে বক্তব্য শোনার পর জানা যায় ছাত্রীর অভিযোগ সব সত্য নহে।শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ শিক্ষক অস্বীকার করলেন।