আজিজুর রহমান প্রিন্স, ঢাকা, বাংলাদেশঃ পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অহংকার। দক্ষিন বঙ্গকে যুক্ত করতে এই সেতু প্রয়োজন ছিল। সেতুর নির্মান কৌশল আর পরিকল্পনা বদলে দিয়েছে দৃষ্টি। ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রাস্তাটি দুই পাশে একমূখি করা হয়েছে। স্থানীয় চলাচল মাওয়া সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছেনা এবং দুর্ঘটনাও অপেক্ষাকৃত কম হচ্ছে। উন্নত দেশের মত বিভিন্ন পয়েন্টে এক্সিট ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যারা ব্রীজে উঠবে তারা সরাসরি টোল ঘরে চলে যাবে।
পদ্মার উপর দিয়ে বেঁকে যাওয়া সেতুর দৃশ্যটিও অপুর্ব। নীচে দিয়ে একই সঙ্গে চলাচল করবে রেল। বিষয়টি ভাবতেই পুলকিত হই। এই সেতু নির্মানের ফলে পিছিয়ে থাকা বিক্রমপুর অঞ্চলটি এখন জমজমাট হয়ে উঠেছে। নানা রকম সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে বুড়িগঙ্গার ওপার থেকেই। সেতু এবং রেল চালু হলে বিক্রমপুর বাসীদের ঢাকায় থাকার প্রয়োজন হবে না। বাড়ী থেকেই অফিস করতে পারবে ঢাকার চেয়ে সহজ ভাবে এবং কম সময়ে। ধানমন্ডি থেকে গুলিস্তান যেতে সময় লাগে ৪০ মিনিট। জ্যামে আটকে গেলে ঘন্টাও পেরিয়ে যায়। রেলে মাওয়া থেকে গুলিস্তান পৌছে যাবে ২০ মিনিটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীরাও ঢাকায় এসে ক্লাশ করে ফিরতে পারবে দিনে দিনেই। ঢাকা শহরের জনবসতি কিছুটা হলেও স্বস্থি পাবে।
ঢাকা শহরে মধ্যবিত্ত্ব পরিবারে আয়ের অর্ধেক ব্যয় হয় বাসা ভাড়ায়। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার জন্য বাধ্য হয়েই বসবাস করে ঢাকায়। রেল সেতু চালু হলে অবস্থাটি বদলে যাবে। স্বাচ্ছন্দেই নিজ গৃহ থেকে যাতায়াত করতে পারবে। বসতি বেড়ে গেলে গ্রামেই হয়ত ভাল স্কুল প্রতিষ্ঠা করে ফেলবে কেউ। ভয়টি হল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বটি কার উপর ন্যস্ত থাকবে! রেল নিয়ম মত চলাচল করতে পারবে কিনা! ব্যত্যয় হলে সবকিছুই সঙ্কটে পরবে। ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দিলে সব কিছুই অচল হয়ে যাবে। শুরু হবে নিয়ম ভঙ্গের নিয়ম। বি আর টি সি’র বিশাল প্রতিষ্ঠান থেকেও বাস চালায় ইজারাদার। ইজারাদারই যদি বাস সার্ভিস পরিচালনা করবে তাহলে বাসের রং লাল কেন? বি আর টি সি প্রতিষ্ঠানেরই বা প্রয়োজন কি? ভাড়ায় চালাতে চেয়ারম্যান, পরিচালক নিয়ে সরকারী দপ্তর থাকার দরকার আছে কি? কেন তবে লোকবল পুষতে হবে জনগনের টাকায়?
পদ্মা সেতু চালু হলে কারা কি দখল করবে তার প্রস্তুতি চলছে এখন থেকেই। টোল ঘর ইজারা নেওয়ার চেষ্টা তদ্বির এখন তুঙ্গে। পদ্মা সেতু দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প। এই প্রকল্পের ব্যবস্থাপনায় যেন দুষ্টচক্র ঢুকতে যেন না পারে সংশ্লিষ্ঠ সকলেরই উচিৎ হবে প্রথম থেকেই বিষয়টি নজরে রাখার।