মোঃ আমিন আহমেদ, সিলেটঃ নবীগঞ্জে স্কুল ছাত্রীকে জোরপুর্বক অপহরণ ও ধর্ষনের ঘটনায় প্রধান আসামী আসিফ ৪ মাস পলাতক থাকার পর মদন থানা এলাকার গ্রামের বাড়ি থেকে গত শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত আসিফ নেত্রকোনা জেলার মদন থানার দেওয়ানপাড়া গ্রামের সান্তু মিয়ার পুত্র ও একই গ্রামের রুপ্তন মিয়ার পালিত সন্তান। উক্ত রুপ্তন মিয়া পালক পুত্র আসিফসহ তার পরিবার নিয়ে নবীগঞ্জের শিবপাশা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন।
সুত্রে জানাযায়, নেত্রকোনা জেলার মদন থানার ফতেহপুর গ্রামের মৃত কদ্দুছ মিয়ার পুত্র রুপ্তন মিয়া’র পালকপুত্র আসিব ওরপে আসিফ দীর্ঘদিন ধরে নবীগঞ্জ শহরের শিবপাশা এলাকায় বসবাস করে আসছে। এই সুবাধে তাদের পাশের বাসার সাইদুল মিয়ার দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়েকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে প্রায় সময়ই নানা ভাবে উত্যক্ত করতো ও নানা ভাবে কু-প্রস্তাব দিত। এতে আসিফের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিগত চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারী রাতে পুর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসিফ, রুপ্তন, সাহান ও রিয়াজের সহযোগিতায় ওই স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এবং বিভিন্ন স্থানে রেখে তাকে ধর্ষন করে। এ ঘটনায় গত ১৮ জানুয়ারী মেয়ের মা জুলেখা বেগম বাদী হয়ে হবিগঞ্জ নারী শিশু আদালতে সংশ্লিষ্ট ধারায় আসিফসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক মামলার শুনানী শেষে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ প্রদান করেন। উক্ত মামলাটি নবীগঞ্জ থানায় আসলে গত ২৪ জানুয়ারী মামলাটি থানায় রুজু হয়। এরপরই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু সাঈদ মামলা তদন্তে এবং ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য মাঠে নামেন। গত ২৭ জানুয়ারী সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার আউশকান্দি এলাকার একটি রেস্টুরেন্টের সামন থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করেন। পরে তাকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরন করেন। ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে ওই দিনই ভিকটিম ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। এদিকে ঘটনার পরপরই রুপ্তন মিয়া তার পালক পুত্র ঘটনার মুল নায়ক আসিফকে সরিয়ে রাখে। এতে সে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সম্রাট একদল পুলিশ নিয়ে নেত্রকোনা জেলার মদন থানা পুলিশের সহযোগিতায় গত শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) গভীর রাতে ফতেহপুর দেওয়ানপাড়ার সামনের হাওর থেকে আসিফকে গ্রেফতার করে নবীগঞ্জ নিয়ে আসেন। গতকাল রবিবার সকালে ধৃত আসিফকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। এদিকে ছেলেকে গ্রেফতারের পর পালক পিতা মামলার অপর আসামী রুপ্তন মিয়া বাদী ও তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকী দিচ্ছে। এবং তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে বলেও নানান স্থানে বলে বেড়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে আসিফের মামা (পালিত পিতা) রুপ্তন মিয়া বলেন, আসিফ আমার পালিত সন্তান। তারা আমার ছেলের নামে ধর্ষণ মামলা করেছে। নবীগঞ্জ থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেই ঈদে বাড়ি আসছিলাম। ঈদের দিন রাতে পুলিশ আসিফকে গ্রেফতার করেছে। বাদীর পরিবারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, আসিফের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ি ফতেপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নবীগঞ্জ থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সম্রাট গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।