ডেস্ক রিপোর্টঃ আজ শুক্রবার (১৪ মে) পবিত্র ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এলো অনাবিল আনন্দ ও খুশির ঈদ। ঈদ মানেই পরম আনন্দ। ঈদ মানেই নতুন জামাকাপড়। ঈদ মানে আত্মীয়-স্বজন আর বন্ধুদের মিলনমেলা, হৈ-হুল্লোড়, ঘুরে বেড়ানো, খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডা। এ উৎসবে মুসলমানরা ঈদগাহে কোলাকুলি ও করমর্দন করে থাকেন।
‘ঈদ’ মানে খুশি আর ‘ফিতর’ শব্দটি ‘ফিতরা’ শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ দানখয়রাত। তাহলে, ‘ঈদুল ফিতর’ এর অর্থটি দাঁড়ালো দানখয়রাতের মাধ্যমে সকলে মিলে খুশীর ঈদ উদযাপন। এছাড়া সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, ভালোবাসার বন্ধনে সবাইকে নতুন করে আবদ্ধ করাও ঈদের অন্যতম অর্থ। ঈদ মানে ভোগান্তিকে সঙ্গী করে নাড়ির টানে গ্রামের বাড়িতে মা-বাবা, ভাই-বোনদের সঙ্গে একত্রিত হওয়া। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবারে গত বছরের মতো ঈদ আনন্দের সবকিছুতেই যেন ভাটা পড়েছে। অদৃশ্য এক ভাইরাসে পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। এক কথায় বলতে গেলে, এবারও ঈদ উৎসব আনন্দ-খুশির ডালা সাজিয়ে নয়, এসেছে শঙ্কা-অনিশ্চয়তার বার্তা নিয়ে।
ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, পূর্ণমাস সিয়াম সাধনার পর ঈদ মুসলমান জাতির প্রতি মহান আল্লাহ তায়ালার এক বিরাট নিয়ামত। এই উৎসবেই ধনী-গরিব, শত্রু-মিত্র সবাই ভালোবাসা-মমতার বাহুডোরে অনাবিল আনন্দ-উৎসবে মিলেমিশে যায়। নজরুলের ভাষায়, ‘আজ ভুলে যা তোর দোস্ত-দুশমণ, হাত মেলাও হাতে,/তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামে মুরিদ।/ ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।’
এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বাণী দিয়েছেন।
দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বছর ঘুরে আবার এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ” – জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী এই গান গেয়ে আমরা স্বাগত জানাই পবিত্র ঈদুল ফিতরকে। আমি বাংলাদেশের জনগণসহ বিশ্ববাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ঈদ মোবারক।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে আমি দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ। ‘ঈদ মোবারক’।
অন্যদিকে, করোনার কারনে এবারও জাতীয় ঈদগাহ মাঠে হচ্ছে না ঈদের জামাত। তবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের প্রধান জামাত।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টা ও ১০টা ৪৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররমে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়। এতে ইমাম থাকবেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমাম থাকবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী। সকাল ৯টার তৃতীয় জামাতে ইমাম হবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক। চতুর্থ জামাত হবে সকাল ১০টায়। এতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম।পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। এতে ইমাম থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ুর রহমান খান।