স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিশ্বের বহু দেশ বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে। রাষ্ট্রপ্রধান সরকার প্রধানরা ঢাকায় এসেছেন, শ্রদ্ধা জানিয়ছেন শহীদদের। নিকট প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এসেছেন। তিনি শুধু শুভেচ্ছা জানাতে নয় ১.২ মিলিয়ন ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছেন। সঙ্গে এনেছে ১৯০ টি এম্বুলেন্স। মোদির ঢাকা সফর নিয়ে উগ্রবাদি সন্ত্রাসীরা নানা রকম হুমকি ধমকি দিয়েছে। রেড এলার্ড দেখানো হয়েছে দেশজুরে। হেফাজত ছাড়াও অনেক রাজনৈতিক নেতা যুক্ত হয়েছেন ইন্দন যোগিয়েছেন মোদির সফর ঠেকাতে।
সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করা রাজনীতিরিই শিষ্ঠাচার এবং তা’র একটি গনতান্ত্রিক পদ্ধতি রয়েছে। একজন সরকার প্রধানের শুভেচ্ছা সফর ঠেকাতে দেশের অভ্যন্তরে অস্থিরতা সৃষ্টি করা রাজনীতি নয় সন্ত্রাস। দেশে সন্ত্রাস করার উদ্দেশ্যটি বিশ্লেষণের দাবী রাখে। ভারতের হিন্দু মুসলিম দন্দ বহুদিনের এবং যথেষ্ঠ কারন রয়েছে। ভারতের মোসলমানেরা সেই যুক্তিকতা প্রমান করেই ভারতের নাগরিক। অসংখ্য দাঙ্গা হয়েছে ধর্ম বিশ্বাসীদের মধ্যে। হানাহানি হয়েছে প্রান গেছে মানুষের। হিন্দুস্থান বলে হিন্দুদের দেশ দাবী করলেও ভারত বিশ্বের দিতীয় বৃহত্তম মুসলিম অধ্যুসিত দেশ। ২ হাজার বছর ধরে ভারত শাসন করেছে মুসলমানেরা। হিন্দু শাসন এখনো দু’শ বছর পেরোয়নি। সেই দেশেই গুজরাটের রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে মোদি হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গাকে উস্কে দিয়েছিল। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি এবং দুই ধর্মের সহবাস্থানটিকে হুমকির মূখে ঠেলে দিয়েছেন। তার জের ধরেই মোদি এখন সমালোচিত নীজ দেশেই। মোদি সরকার ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে টলমলে অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু ভারত শুধু মোদির নয় ভারতবাসীর। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকার প্রধান। বাংলাদেশ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকার প্রধানকে আমন্ত্রন জানিয়েছে। কুটনৈতিক এই শিষ্ঠাচার গনতন্ত্রকেই সমৃদ্ধ করে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের এই সম্পর্কটি স্বাধীনতার পর থেকেই। প্রতিবেশী এই দুই রাষ্ট্রের সম্পর্কটি দুই দেশের জন্যই জরুরী। যারা সামান্য জর হলেই ভারতে যান চিকিৎসার জন্য তাদের এমন মোদি ঠেকাও আন্দোলনের একটি অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য আছে- রাজনীতি। দেশে এখন কোন ইস্যু নেই আন্দোলনের। ভারতের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেওয়াই তাদের রাজনীতি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান’ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তি উপলক্ষে শুভেচ্ছা বানী পাঠিয়েছে। ৭১ সালে এই পাকিস্তানিরাই বাংলাদেশে গনহত্যা চালিয়েছে। বুদ্ধিজীবি হত্যা করেছে। ৯ মাস পাকিস্তানীদের সঙ্গে যূদ্ধ করেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। পাকিস্তানীদের বর্বরচিত গনহত্যার কারনে এই আন্দোলনকারীরা ইমরান খানের শুভেচ্ছাকে প্রত্যাখ্যান করেনি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দক্ষিন পুর্ব এশিয়ায় এক নতুন ধারা প্রবর্তন করে দিয়েছে। এখন মালোয়েশিয়া নয় বাংলাদেশকেই মডেল মনে করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ভারত কিংবা পাকিস্তান দুই দেশকেই ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। আঞ্চলিক সম্পর্কের জন্য বাংলাদেশ দক্ষিন পুর্ব এশিয়াতে এখন গুরত্বপুর্ন অবস্থানে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন বিশ্বের অন্যতম নেত্রী। আনবিক যূদ্ধ নয় অর্থনৈতিক যূদ্ধে বাংলাদেশ এখন দক্ষিন পুর্ব এশিয়ার অন্যতম অংশিদার। কিন্তু দেশের কিছু নেতা এই সত্য জনেও সরকারের বিরোধীতা করছে নীজেদের অক্ষমতা আর প্রতিহিংসার কারনে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বহুলাংশে ভারতের উপর নির্ভরশীল ছিল। এখন ভারত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং বানিজ্যিক সম্পর্কটি ধরে রাখতে চায়। এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে নেতৃত্বের কারনে। রাজনীতি আবেগের জায়গা নয় মেধা আর যোগ্যতা প্রয়োজন। সারা বিশ্ব যখন বাংলাদেশের উন্নয়ন উন্নতি দেখে বিস্বয় প্রকাশ করছে তখন বাংলাদেশের কিছু নেতা প্রতিহিংসামূলক আচরন করছে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে। কিন্তু বাংলাদেশ এখন পুর্বের অবস্থানে নেই। আন্দোলনের ঠুনকো ইস্যু ব্যবহার করে জনগনকেও আর সম্পৃক্ত করা যাচ্ছেনা। জাতীর পিতার জন্মশত বার্ষীকিতে বিশ্ব নেতাদের শুভেচ্ছা বানী আর ঢাকা সফর কারো কারো হৃদয়ে জালা ধরালেও এটাই প্রত্যাশিত। করোনার বিপত্তি না হলে আরও বহু দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধানের ঢাকা সফর নিশ্চিত ছিল। হরতাল সাংস্কৃতি বাংলাদেশে এখন অচল প্রায়। হরতালের ডাক দিয়ে যারা ঘরে বসে ঢেকুর গিলেন তারা ঘরের বাইরে এসে দেখুন। জনগন আপনাদের সমর্থন করেনি। বাংলাদেশে এখন একটি বিরোধী দল খুব প্রয়োজন কিন্তু আপনারা সেই প্রয়োজনের জায়গাটি পুরন করতে পারেননি। ব্যর্থতার গ্লানি ছেয়ে গেছে সর্বত্র। এবার ক্ষান্ত হউন আর দেশকে ভালোবাসুন।