বিনোদন ডেস্কঃ মডেল ও অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণা কখনো ডিভোর্সি আবার কখনো সংসারের আর্থিক সংকটে কষ্টে আছেন এমনটা বলেই নিতেন টাকা। পরে করতেন বিয়েও। কৌশলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে লিখে নিতেন জায়গা-জমিও। এমনটাই জানা গেছে সৌদি প্রবাসী ব্যবসায়ী কামরুল হাসানের করা অভিযোগ থেকে।
গেল বৃহস্পতিবার সাবেক স্বামীর কাছ থেকে এক কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে মডেল ও অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণাকে রাজধানীর লালমাটিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
প্রতারিত হওয়া প্রবাসী কামরুল ইসলাম জানান, রোমানা তার সঙ্গে প্রথমে ভাল সম্পর্কে করে। তারপর লালমাটিয়ায় ফ্ল্যাট কেনার নাম করে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আমি দেশে আসার পর আমাকে বাসায় ডাকে। আমি যাই। গেলে তারা আমাকে কিছু একটা খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। এরপর আমার খারাপ ছবি তুলে নেয় ও আমার থেকে স্ট্যাম্পে সাইন নিয়ে নেয়। এভাবেই সে আমাকে জোর করে বিয়ে করে। তার মোবাইল, ঘড়ি, গাড়ি আর সবই আমার কিনে দেয়া। আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে বললেও তা মিথ্যা। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
এদিকে প্রতারিতদের দাবি, মোট ২৮ জনের সঙ্গে এভাবে বিভিন্ন প্রতারণা করে বিয়ে করে রোমানা হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। পুলিশ বলছে, এই পরিবারের প্রতিটি সদস্য প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ কাজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এই পরিবারের প্রতিটি সদস্যই বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে একই প্রক্রিয়ার প্রেম ও বিয়ের সম্পর্কের অভিনয় করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
আজ সোমবার পুলিশের বরাত দিয়ে দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, রোমার টার্গেটে শুধু কামরুল হাসান নয়, তার মতো অনেক প্রবাসী স্বর্ণার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। স্বর্ণা গ্রেফতার হওয়ার পর দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অনেকে যুবক প্রতারিত হয়েছে জানিয়ে অভিযোগ দিচ্ছেন।
তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুণ অর রশীদ বলেন, শুধু সৌদি প্রবাসী কামরুল নয়, তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন আরও অনেকে। অনেক প্রবাসী থানায় ও আমাদের মোবাইলে ফোন করে মডেল স্বর্ণার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, অভিযোগগুলো আসলে আমরা সঠিকভাবে বলতে পারব তার কয়টি বিয়ে হয়েছিল। তবে একাধিক বিয়ে তো তিনি অবশ্যই করেছেন। ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করে অর্থ হাতিয়ে নেয়াই ছিল রোমানার প্রধান ব্যবসা। প্রাথমিকভাবে তার একাধিক স্বামী থাকার কথা জানা গেছে।
ডিসি হারুণ আরো বলেন, আদালত জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিলেও প্রয়োজনে রোমানাকে আবারো রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হবে। জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করে যদি সন্তোষজনক কোনো কিছু না পাই তাহলে আবার পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে। তাহলে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারব। স্বর্ণার অ্যাকাউন্টে কারা টাকা পাঠিয়েছেন তাও জানতে পারব।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে স্বর্ণা অভিনিত একটি সিনেমা মুক্তি পায়। এ ছাড়া তিনি নাটক করেন এবং একাধিক বিজ্ঞাপনে মডেলও হয়েছেন। তবে এখানেই সীমাবদ্ধ থকেননি তিনি। ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করে খুলতেন আলাদা আলাদা ফেসবুক আইডি। আপলোড করতেন বিভিন্ন আপত্তিকর সব ছবি। এরপর ফ্রেন্ড বানিয়ে গড়ে তুলতেন প্রেমের সম্পর্ক। তারপর শুরু হত প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ।