হুমায়ুন কবির, রাণীশংকৈল, (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল পৌর শহরের ৬ নং ওয়ার্ড মধ্য ভান্ডারা গ্রামের আব্দুল মজিদ নামে ৮৮ বছর বয়সী এক বাদাম বিক্রেতা বৃদ্ধের বাড়িতে নলকূপ দিলেন ইউএনও।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবিরের নির্দেশে গত ১১ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সহকারি কমিশনার ভুমি প্রীতম সাহা নিজেই গিয়ে মিস্ত্রি লাগিয়ে নলকূপটি স্থাপন করিয়ে নেন ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় পৌরশহরের মধ্য ভান্ডারা গ্রামের মৃত বিরোজ আলী আকন্দ’র ছেলে আব্দুল মজিদ নামে এই বৃদ্ধের দুই ছেলে এবং এক মেয়ে কিন্তু এই শেষ বয়সেও মজিদ ও তার স্ত্রী সালেহার ভরণ পোষনের দায়িত্ব নেননি সন্তানেরা। বাড়ি বসতের জমিটুকুও ফুসলিয়ে ৩ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে তাঁর ছেলেরা টাকা হাতিয়ে নেয়। অসহায় হয়ে বৃদ্ধ বাবা অন্যের জমিতে ছোট একটি টিনের বেড়ার ঘরে বসবাস করে। এবং জমির বাৎসরিক ভাড়া বাবদ প্রতি বছর দিতে হয় ২ হাজার টাকা।
আর জীবন জীবিকার জন্য এই বয়সেও বাদাম বিক্রি করে স্বামী- স্ত্রীর সংসার চলে কোনমতে। সারা দিন বাদাম বিক্রি করে সন্ধ্যায় বাজার করে নিয়ে আসে আব্দুল মজিদ। স্বামী স্ত্রীর দু’জন মিলে তাদের সংসার ।
এ বিষয়ে আব্দুল মজিদের স্ত্রী সাহেলা জানান আমার স্বামী সারাদিন বাদাম বিক্রি করে সন্ধ্যায় যে টাকা রোজগার হয় তাই দিয়ে চলে আমাদের সংসার দেখার মত নেই কেউ। ছিল দুটি সন্তান তারাও আজ আমাদের কাছ থেকে দূরে রয়েছে। আমাদের নিজস্ব কোন বাড়ি বসত নেই, আমরা ভূমিহীন। যেটা ছিল ছেলে সন্তানেরা বিক্রি করে চলে গেছে ।
এ দিকে আব্দুল মজিদ মুচকি হেসে বলেন আমি যে ভাবে আছি অনেক সুখে আছি । আমার প্রায় ৫ মাস ধরে টিউবওয়েল ছিল না পানির অভাবে অনেক কষ্টে চলতাম। মাস খানেক আগে ছাত্রলীগ নেতা আমার খুর পরিচিত তামিম হোসেনকে নলকূপের ঘটনাটি জানালে সে আমাকে ইউএনও স্যারের কাছে নিয়ে যায়।
স্যার আমার দুঃখ অনুভব করে আজ এসিল্যান্ড স্যারকে দিয়ে টিবওয়েল পাঠিয়ে দেয়। এবং তিনি নিজেই উপস্থিত থেকে সেটি বসিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে আব্দুল মজিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি আবাও মুচকি হেসে বলেন ইউএনও স্যারকে ধন্যবাদ, আল্লাহ ওনার ভালো করুক।