মো.আমিন আহমেদ, সিলেট প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলায় হাওর রক্ষা প্রকল্পের নামে চলছে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতি। এ উপজেলার বেশ কয়েকটি প্রকল্প গঠিত হয়েছে নামে মাত্র। একই বাড়িতে পাচ পিআইসিসহ অযোগ্য, অদক্ষ, অকৃষিজীবী ব্যক্তিদের পিআইসিতে যুক্ত করা হয়েছে। হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় বাঁধের নির্মাণ কাজের ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি’- (পিআইসি) গঠন নিয়ে শুরু থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আড়ালে রয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকার দলীয় ও প্রভাবশালী লোকেরা। হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের কয়েকটি অবৈধ সিন্ডিকেট চক্র প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি ও কাজের বিবরণ সংক্রান্ত সাইনবোর্ড প্রকাশেও গড়িমসি করছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ফিডার-১ এর আওতাধীন উপজেলার বৃহৎ নলুয়ার হাওরে পাউবোর বেশ কয়েকটি হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের কাজ চলমান। তবে এসময় ভূরাখালী,বেতাউকা সহ কয়েকটি গ্রামের পাশ্ববর্তী নলুয়ার হাওরের পাঁচটি প্রকল্পের কোথাও সাইনবোর্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ পাঁচটি প্রকল্প হচ্ছে- ১৩,১৪,১৫,১৬ ও ১৭ নং নং প্রকল্প।
এ সময় প্রকল্প বাস্তবায়ন ও কাজের বিবরণ সংক্রান্ত সাইনবোর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়ার বাড়িতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সাইনবোর্ড। তিনি এই পাঁচটি প্রকল্প দেখভাল করছেন।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে জুয়েল মিয়া অনুরোধ করেন তার বাড়িতে না যাওয়ার জন্য। বাধা উপেক্ষা করে ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়ার বাড়িতে গেলে তার বাংলোতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির তিনটি সাইনবোর্ড দেখতে পাওয়া যায়।
হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পে সাইনবোর্ড না রেখে তিনির বাড়িতে কেন, জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে আমতা আমতা করে বলেন, ইউপি সদস্য হিসেবে পিআইসি গুলো আমার দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে।
এ সময় জুয়েল মেম্বারের বাড়িতে রাখা তিনটি সাইনবোর্ড থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিবের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে- জানা যায়, তারা কেউও হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প সম্পর্কে অবগত নন। সবার এক কথা- এ সম্পর্কে জুয়েল মেম্বার সব জানেন।
এ সময় জুয়েল মিয়া কর্তব্যরত সাংবাদিকদের নিবারণ করার চেষ্ঠা করে বলেন, আমার বেলায় শুধু একা নয়, অন্যন্য পিআইসি’র আড়ালে আরো অনেকজন জড়িত রয়েছেন।
পরে অনুসন্ধানে জানা যায়,ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া হাওর রক্ষা বাঁধের ওই পাঁচটি প্রকল্পে জড়িত রয়েছেন। অথচ সাইনবোর্ডে নামেমাত্র রয়েছেন তার আত্নীয়-স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনেরা।
জানা গেছে, হলদিপুর-চিলাউড়া ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত রয়েছেন। তিনি অত্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেতাউকা গ্রামের একজন বাসিন্দা জানান, মূলত বাঁধ প্রকল্পে ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া এনেছেন। তিনি তার কাছের লোকদের দিয়ে হাওর রক্ষা বাঁধের একটি পকেট কমিটিতে নাম লিখিয়েছেন। এমতাবস্থায় তিনি কোনো ঝামেলায় পড়তে পারেন এমন আশংকায় সাইবোর্ড নিজের বাড়িতে রাখেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে পওর বিভাগ-২, সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী সামসুদ্দোহা বলেন, এক লোক ৫ কমটি দেওয়ার বিয়য়টি হাওর রক্ষা প্রকল্পের কোনো নিয়ম নীতিতে নেই। এরকম কিছু হয়ে থাকলে বিষয়টি আমর তদন্ত করে আইনত ব্যবস্থা নিবো।
জগন্নাথপুর উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলী মোঃ হাসান গাজী জানান, জার বাড়িতে বোর্ড পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে আপনারা রিপোর্ট করতে পারেন।