সাকিব আল হাসান, রৌমারী (কুড়িগ্রাম): দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি অর্থায়নে অবকাঠামোসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরেও সে ছোঁয়া লাগেনি রৌমারী উপজেলার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে।
উপজেলার প্রথম স্বতন্ত্র কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে অবকাঠামো, যাতায়াত, প্রযুক্তিগতসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নে অবস্থিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির একমাত্র প্রবেশ পথের সেতুটি গত ২০১৮ সালের বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
পরে চলাচলের জন্যে একই স্থানে এলাকাবাসীর উদ্যোগে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মিত হয়। সেটিও এখন চলাচলের অযোগ্য। প্রতিষ্ঠানটিতে পুরাতন টিনশেড দ্বারা নির্মিত তিন কক্ষ বিশিষ্ঠ পাঠদান ভবনটি জরাজীর্ণ। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক বরাদ্দকৃত পাঁচ লাখ টাকা ও প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সাত লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় দুই কক্ষ বিশিষ্ঠ একটি ভবন। কিন্তু গাইড ওয়াল না থাকায় ব্যবহারের আগেই ২০২০ সালের বন্যার ভেঙ্গে যায়। ১.০৬ একর জমির উপর স্থাপিত প্রতিষ্ঠানটির মাঝ দিয়ে জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মেইন লাইন গেছে। যা প্রতিষ্ঠানের জন্য হুমকিস্বরুপ। এছাড়াও শিক্ষা উপকরণ, পাঠাগার, খেলাধুলা সংক্রান্ত নানাবিধ সংকট রয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, যাতায়াত সমস্যাসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও আজও কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যার ফলে দিন দিন স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি শিক্ষার্থীদের চাহিদা কমে যাচ্ছে।
অধ্যক্ষ এসএম হুমায়ুন কবির বলেন, হতদরিদ্র চরাঞ্চলের অবহেলিত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির মাঝে কারিগরি শিক্ষা বিস্তারে অত্র প্রতিষ্ঠানটি এক অনন্য ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরেও এর উন্নয়ন হয়নি। এখন পর্যন্ত একাডেমিক ভবন, ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন ও যাতায়াতের জন্যে সংযোগ সেতু নির্মাণ না হওয়ায় দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে এ প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে একাধিকবার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলেও আজও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় শিক্ষাবান্ধব নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান বলেন, স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান উন্নয়নে অবকাঠামোগত, যাতায়াত, প্রযুক্তিগত সমস্যা নিরসনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।