মোঃ মোশফিকুর ইসলাম, নীলফামারীঃ নীলফামারীর ডোমারে সমবায় সমিতির নামে ছয় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মূলহোতা মামুন হাসান মালিক ওরফে আদম সুফিকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গেল বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-১৩ এর সদর দফতরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় সাভার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-১৩ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আবদুল্লাহ আল মঈন হাসান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাভার থেকে মামুন হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা রয়েছে। তার সহযোগী অন্য আসামিদের গ্রেফতারেও তৎপর রয়েছে র্যাব।
প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মঈন হাসান জানান, গত বছরের নভেম্বরে মামুন হাসান মালিক ওরফে আদম সুফি ও তার সহযোগীরা ডোমার থানার সাহাপাড়ায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে ‘ডোমার বাজার ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি’ চালু করেন। এলাকার বাসিন্দাদের তারা প্রলোভন দেখান, সমিতির মাধ্যমে সদস্যরা যে দামে পণ্য কিনতে চান, তাকে সেই পণ্যটি দেয়া হবে এবং সাত দিনের মধ্যে মূল টাকাসহ ১০ থেকে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ফেরত দেয়া হবে। এতে ১৮ থেকে ৪০ বছরের নারীরা সদস্য হতে পারবেন বলে জানানো হয়।
তিনি আরও জানান, সমিতির মাধ্যমে কয়েকজন নারী সদস্য প্রাথমিকভাবে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মূল টাকাসহ লভ্যাংশ পাওয়ায় অনেকে প্রলুব্ধ হন। প্রায় সহস্রাধিক নারী নিজেদের সহায়-সম্বল বিক্রি করে সমিতিতে টাকা জমা দেন। এভাবে দুই মাসে প্রায় ছয় কোটি টাকা সংগ্রহ করে চক্রটি। একপর্যায়ে তারা সমিতির কার্যালয় বন্ধ করে উধাও হয়ে যায়। খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ায় বেশ কয়েকজন নারীকে তাদের স্বামীরা তালাক দেন। এতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে একজন নারীর মৃত্যুও হয়।
র্যাব কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মঈন হাসান আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত করা হয়। এছাড়া ইউএনও’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ভুক্তভোগী নারীরা গত বছরের ২০ ডিসেম্বর স্মারকলিপি দেন। পরে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি ভুক্তভোগী চারজন নারী ডোমরা থানায় প্রতারকদের নামে মামলা করেন। তারা র্যাব-১৩ ও র্যাবের নীলফামারী কোম্পানি কমান্ডার বরাবর অভিযোগ দেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, র্যাব কর্তৃক উক্ত ঘটনাটি অবগত হওয়ার পরপরই বিশদ অনুসন্ধান এবং তদন্ত পরিচালনা করা হয়। একপর্যায়ে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা মামুন হাসান মালিক ওরফে আদম সুফি ঢাকায় তার এক নিকট আত্মীয়ের বাসায় গোপনে অবস্থান করছে বলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে সাভার থেকে গ্রেফতার করা হয়।