মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ও অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহনে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক নির্বাহী আদেশে এ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন তিনি। খবর- বিবিসি।
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ মিয়ানমারের সামরিক নেতা, তাদের পরিবারের সদস্য এবং তারা যেসব ব্যবসাবাণিজ্যে জড়িত, সেসবে কার্যকর হবে। এছাড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আরও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
এদিকে, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী মিছিলের মধ্যে গুলিতে এক নারী বিক্ষোভকারী গুরুতর আহত হওয়ার পর দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য, রাজধানী নেপিদোতে গত মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান, রাবার বুলেট ও তাজা গুলি ছুড়লে মাথায় আঘাত পান ম্যায়া থুয়ে থুয়ে খাইং নামের ওই আন্দোলনকারী। রাজধানী নেপিদোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে খাইংয়ের। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়া ওই নারীর অবস্থা সংকটাপন্ন।
আন্দোলন দমাতে রাত্রিকালীন কারফিউসহ নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে জান্তা সরকার। কিন্তু কিছুতেই পাত্তা দিচ্ছে না বিক্ষোভকারীরা। সেনাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বন্দুকের মুখেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
তবে শুরু থেকে এই অভ্যুত্থানের কড়া সমালোচনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব এবং জাতিসংঘসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী জনতার বিরুদ্ধে নিপীড়নের ওপর বিশ্ব নজর রাখছে বলে জানিয়ে বাইডেন বলেন, ‘বার্মার জনগণ তাদের প্রতিবাদী কণ্ঠ আরও জোরাল করছে এবং বিশ্ব তা পর্যবেক্ষণ করছে। আন্দোলন বাড়ার প্রেক্ষাপটে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিরুদ্ধে যেসব সহিংসতা চালানো হচ্ছে তা অগ্রণযোগ্য। আমরা এসব বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিপীড়নের জেরে আগে থেকেই দেশটির সেনাবাহিনীকে কালোতালিকাভুক্ত করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভ্যুত্থানের পর তাদের ওপর অবরোধের পরিধি আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিল বাইডেন প্রশাসন।
চলতি সপ্তাহেই প্রথম রাউন্ডের অবরোধের আওতা নির্ধারণ করা হবে জানিয়ে বাইডেন বলেন, ‘আমরা তাদের পণ্যসামগ্রী রপ্তানির ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করব। বার্মিজ সরকার লাভবান হয় যুক্তরাষ্ট্রে এমন সব সম্পদ জব্দ করব। তবে স্বাস্থ্যসেবা, সুশীল সমাজ ও অন্যান্য ক্ষেত্র যেসবে বার্মার জনগণ সরাসরি সুবিধা পায় সেসবে আমাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাগ্রহণের পর এই প্রথম কোনো দেশের ওপর অবরোধ আরোপের ঘোষণা দিলেন বাইডেন। সুত্রঃ বিবিসি।