আজ বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) । পয়লা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। বিপুল ঐশ্বর্যের অধিকারী ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার দিন।
কৃষ্ণচূড়া, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, মালতী, মাধবী, বকুল, শিমুল, পলাশসহ নানা জাতের ফুল ফোটে। আমের মুকুলের সৌরভে ম ম করে আকাশ বাতাস। আর এই আগুন লাগা ফাগুনেই গাছে গাছে সুললিত কণ্ঠে প্রিয়াকে ডেকে আকুল হয় কোকিল। বসন্তকে বরণ করার প্রধান অনুষঙ্গ ফুল।
পহেলা ফাল্গুনের দিন তরুণীরা চুলে খোপা বেঁধে কেউ বেনী করে ফুলের মালা, ফুল দিয়ে জড়িয়ে ঘুরতে বের হয়। এজন্য দেশের বৃহত্তম ফুলের বাজার শাহবাগ, কাঁটাবনসহ রাজধানীর ফুলের দোকানগুলোতে ওঠে ব্যবসা। গাঁদা, রজনীগন্ধা, বেলী ও গোলাপের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি।
পহেলা ফাল্গুন বা বসন্তের প্রথম দিনে বাঙালি নারীরা বাসন্তী বা হলুদ রঙের শাড়ি পরে তাজা ফুলের অলংকার ব্যবহার করে ঢাকা শহরে বের হয়।
শাহবাগ, টিএসসি, রমনা, ধানমণ্ডিলেকের চত্বর এদিন বাসন্তী রংয়ের শাড়ি পরা নারী ও বিভিন্ন রংয়ের ফুলে রঙিন হয়ে ওঠে। এ মাসে একুশে গ্রন্থমেলা হওয়ার কারণে বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণ বসন্তের রঙে রঙিন হয়ে ওঠে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, টিএসসি, চারুকলাসহ পুরো শাহবাগ এলাকাতেই অসংখ্য নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ,তরুণ-তরুণীরা বসন্তে উৎসবে মেতে ওঠে।
বসন্তেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল। তাই কেবল প্রকৃতি আর মনে নয়, বাঙালির জাতীয় ইতিহাসেও বসন্ত আসে এক বিশেষ মাহাত্ম্য নিয়ে। বসন্ত হয়ে উঠেছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক অনন্য উৎসব। ফাগুনের প্রথম দিনে বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে পথে নামে তন্বী-তরুণীরা।
নতুন ফুলে খোঁপা সাজায়। অসংখ্য রমণীর বাসন্তী রঙে রঙিন হয়ে ওঠে রাজধানীর রাজপথ, পার্ক, একুশের বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশোভিত সবুজ চত্বরসহ পুরো রাজধানী। তরুণরাও আজ পরবে বাসন্তী রঙের পোশাক। প্রকৃতির ছোঁয়া নিতে তারাও বেরিয়ে পড়বে। বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলা পরিণত হবে প্রেমিক-প্রেমিকাদের মিলনমেলায়। একে অন্যের হাতে তুলে দেবে প্রিয় কোনো কবির কবিতার বই কিংবা ভালোবাসার গল্প। অসাম্প্রদায়িক উৎসবের রং ছড়িয়ে পড়বে সারা শহরে।
সব মিলিয়ে অনন্য ঋতু বসন্তকে বরণ করে নিতে প্রতিবছরই বিশেষ প্রস্তুত হয় দেশ। এবারও রাজধানীজুড়ে নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি। বসন্তের প্রথম দিনে আজ নানা আয়োজনে আলোড়িত হবে রাজধানী ঢাকা।