সিরাজগঞ্জে নবনির্বাচিত কাউন্সিলরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। বিজয়ের আনন্দ মিছিল চেড়ে জানাজায় শরিক হয়েছে সমর্থকরা। নিরাপদে খুনী পালিয়ে গেছে সবার সামনে থেকেই। প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা বলছে প্রতিহিংসার স্বীকার হয়েছেন নির্বাচনে বিজয়ী কাউন্সিলর। এখন চর্চা হবে, গ্রেপ্তার হবে-মামলা হবে আদালতে কিন্তু জীবনটি আর ফিরে আসবেনা। পরিবারটিকেও এই শোক বহন করেই বেঁচে থাকতে হবে আমরন। এই ঘটনা দুঃখজনক, অপ্রত্যাশিত এবং সুষ্ঠ বিচার দাবী করি খুনীদের। খুনী যে’ই হউক আর যে দলেরই হউক কঠিন বিচার করতে হবে এটাই সকলের দাবী। দলীয় পরিচয়ে কেউ ছাড় পাবেনা আশা করে ঐ অঞ্চলের সাধারন মানুষ। প্রতিপক্ষের প্রতিক্রিয়াটি খুনীদের উপর নয়। তারা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। কর্মসুচীও দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে ফলাফলও ঘোষনা করে দিয়েছে। নিরাপত্তার দায়ীত্বটি ছিল পুলিশের উপর এবং যথেষ্ঠ পুলিশও উপস্থিত ছিল শহরে। দায়ী করলে পুলিশকে করার কথা। আন্দোলনের ইস্যু বানাতে দায়ী করেছে নির্বাচন কমিশনকে। মানুষের ভিড়ে খুনি খুন করে কিভাবে পালিয়ে গেল বলছেনা কেউ। উদ্দেশ্যটি খুনের দায় সরকারের উপর চাপিয়ে ব্যার্থতার দাবীকে প্রতিষ্ঠিত করা। নির্বাচন কমিশনকে সরকারের আজ্ঞাবহ প্রমান করা।ব্যার্থতাটি প্রমান করতে পারলে সরকার পতনের ডাক দিবে নেতারা। জণগনকে ক্ষেপাতে এমন একটি লাশই দরকার ছিল তাদের। নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে নিজেদের দাবীটি সত্য প্রমান করার চেষ্টা করছে বহুদিন ধরেই। মৃতের প্রতি সহানুভুতির জন্য কেউ আন্দোলন করছে না। কাউন্সিলর হত্যার দায় সরকারকে অবশ্যই নিতে৷ হবে। খুনীকে খুজে বেড় করে আইনের আওতায় আনাও এখন সরকারের দায়ীত্ব। দলীয় সংশ্লিষ্ঠতায় কেউ ছাড় পাবেনা প্রমান করে সরকারকেই প্রমান করতে হবে স্বচ্ছতাটি। কাউন্সিলর হত্যাকে ইস্যু করে আন্দোলনের হুমকি দেওয়াই কৌশল হিসাবে নিয়েছে বিক্ষুদ্ধ নেতারা। এটি রাজনীতির অপকৌশল।
নির্বাচনে পরাজিত হয়ে অভিযোগের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। সব নির্বাচনেই ভুরি ভুরি মামলা রুজু হয় আদালতে। পরাজিত হওয়ার এবং জনগনের রায় মেনে নেওয়ার শিষ্ঠাচার বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেই। যতদিন রাজনীতিতে এই শিষ্ঠাচার ফিরে না আসবে ততদিন গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবেনা। রাজনীতির প্রতিহিংসায় এমন হত্যা ঘটতেই থাকবে। যারা মানুষের জন্য রাজনীতি করেন, নিজেদেরকে নেতা দাবী করেন তাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা দেশে কেমন রাজনীতি চান। নেতারা কেমন রাজনীতি করবেন তা নেতারাই ভেবে দেখবেন। তবে দেশের ১৬ কোটি মানুষ দেশে শান্তি চায়। সুষ্ঠ রাজনীতি চায়। অপরাজনীতির নামে আর কোন মানুষ হত্যা চায়না বাংলাদেশের মানুষ।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরন্টো, কানাডা
১৮ ই জানুয়ারী ২০২১।