অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোভিড ভ্যাক্সিন ‘কোভিশিল্ড’-কে অনুমোদন দিল ব্রিটিশ সরকার। যুক্তরাজ্যের টিকাদান কর্মসূচির জন্য এটিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। টিকাটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা থেকে টিকাটির ১০ কোটি ডোজের ক্রয়াদেশ এরই মধ্যে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
বুধবার ব্রিটিশ ওষুধ ও স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমএইচআরএ-এর প্রস্তাব অনুযায়ী, কোভিশিল্ড-কে ব্রিটিশ নাগরিকদের উপরে প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসন। এর জেরে ভারতে সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত এই টিকার অনুমোদনও খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা।
সম্প্রতি করোনার নয়া স্ট্রেন ধরা পড়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সবথেকে কঠোরতম লকডাউন জারি করা হয়েছে ব্রিটেনে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে আতঙ্ক সব জায়গাতেই। এই অবস্থায় ব্রিটেনের সঙ্গে যাতায়াতের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ভারত সহ একাধিক দেশ।
এরকম কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনিকার তৈরি ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র পাওয়া নিঃসন্দেহে ব্রিটেনের পাশাপাশি গোটা বিশ্বের কাছে স্বস্তির খবর।
‘A landmark moment’ for the UK’s fight against #COVID19: today we welcome the news that @MHRAgovuk has authorised the safe & effective #OxfordVaccine for emergency use in the UK >> https://t.co/I7q6swNdpu
— University of Oxford (@UniofOxford) December 30, 2020
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকাটি ২০২০ সালের প্রথম মাসেই তৈরি করা হয়, এপ্রিলে প্রথমবারের মতো কোনো স্বেচ্ছাসেবীর ওপর প্রয়োগ করা হয় এবং এর পর হাজার হাজার মানুষের ওপর টিকাটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হয়।যেই গতিতে এই টিকাটি উদ্ভাবন করা হয়েছে তা মহামারির আগে অচিন্তনীয় ছিল।করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দ্বিতীয় কোনো টিকা হিসেবে এটি যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেল।
এর আগে ডিসেম্বরেই ফাইজার-বায়োঅ্যানটেকের টিকা অনুমোদন দিয়েছিল দেশটি। যুক্তরাজ্যে এরই মধ্যে ৬ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে।
তবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার অনুমোদন দেয়ার ফলে টিকাদানের গতি বেশ খানিকটাই বেড়ে যাবে কারণ এই টিকাটি স্বল্পমূল্যের এবং সহজেই উৎপাদন করা যায়।সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এই টিকাটি সাধারণ ফ্রিজেই সংরক্ষণ করা যায়, যেখানে ফাইজার-বায়োঅ্যানটেকের টিকাটি সংরক্ষণ করতে হয় -৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়।
প্রসঙ্গত ৮ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেডিসিন জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন কার্যকর ও নিরাপদ।
২৭ ডিসেম্বর (রবিবার) অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান বলেন, আমরা মনে করি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বাড়ানোর উইনিং ফর্মুলা পেয়ে গেছি। দুই ডোজের পর প্রায় সবার সমান কার্যকারিতা হয়ে যাবে। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারছি না। আজ (বুধবার) ব্রিটিশ ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দিয়েছে, যার মানে হচ্ছে, এটি নিরাপদ ও কার্যকর।