মার্চ মাসে শুরু হয়েছে করোনা। অনেকেই ভেবেছিল হয়ত শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু দেখতে দেখতে পুরু বছরই শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখনো কার্যকারী কোন ঔষধ আবিস্কার হয়নি কোথায়ও। ভেকসিন আবিস্কার করেছে কয়েকটি কোম্পানি কিন্তু প্রয়োগ শুরু হয়নি। আমেরিকার ফাইজার কম্পানি ৯৫% শতাংশ কার্যকর দাবী করে ভেকসিন আবিস্কারের ঘোষণা দিয়েছে। সেই ভেকসিন এখন অনুমোদনের অপেক্ষায়। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডেও ভেকসিন আবিস্কার করেছে। তাদের দাবী ৭০% শতাংশ কার্যকর হবে। মূল্যের দিক থেকেও সহজলভ্য দাবী করেছে তারা। সব দেশই এখন ভেকসিন কিনতে প্রস্তুত তবে মুল্য নির্ধারণ না হওয়ায় অনিশ্চিত বহুদেশে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ভেকসিন কেনার অর্থ অনুমোদন দিয়ে কেনার ঘোষণা দিয়েছে। ভাবনাটি হল এই ভেকসিন সবার জন্য সহজতর হবে কিনা! বিত্ত্বশালীদের মূল্যের ভাবনা নেই কিন্তু যারা অসমর্থ তাদের কি হবে? বিষয়টি নিয়ে এখোনই ভাবা উচিৎ হবে। একজনেরও যদি করোনার সংক্রমণ থেকে যায় তা অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
দেশে এখন বিত্বশালী মানুষের সংখ্যা অনেক। ব্যাংকের টাকা লূট করে বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছে অনেকে। এই জাতীয় দুর্যোগে বিত্ত্বশালীরা জনস্বার্থে এগিয়ে এলে সকলকেই ভেকসিন দেওয়া সম্ভব হবে। যেমন করে বন্যা, টর্নেডো এলে বিত্ত্ববানরা সাহায্যের হাত বাড়ান তেমন করে এগিয়ে এলে সকলের জন্য ভেকসিন কেনা সম্ভব হবে। দেশের মানুষের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি হলে অনেক বড় সমস্যাকেও মোকাবেলা করা যায়। ৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষ সেই দুঃসাহস দেখিয়েছে এবং জয়ী হয়েছে। বাংলাদেশকে স্বাধীন করে ফেলেছে। দেশে রাজনীতি নিয়ে মতানৈক্য আছে। গণতন্ত্রে এমন মতবিরোধ অপ্রত্যাশিতও নয়। কিন্তু দেশের স্বার্থে, দেশের জনগণের জীবন রক্ষার স্বার্থে অন্তত একবার, একটি জাতীয় ঐক্য প্রত্যাশা করি। রাজনীতি থাকবে, রাজনীতির বিরোধও থাকবে। সমালোচনাও থাকবে, কেউ সমালোচনার উর্ধ্বে নয়। কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনার উপদ্রব থেকে দেশকে বাঁচাতে সব মতভেদ ভুলে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন। মানুষের জীবন রক্ষার রাজনীতি করুন। জনগণের জন্য আপনারা রাজনীতি করেন, আগে জনগণের জীবন বাঁচান। ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা করুন। এই কাজটি করতে পারলে প্রতিদিন মাঠে ঘাটে বক্তৃতা করে ভোট চাইতে হবেনা। জনগণই আপনাদেরকে নেতা হিসাবে বেছে নিবে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরন্টো, কানাডা
২৩ নভেম্বর ২০২০।