বিশ্বব্যাংক অতি দারিদ্র্যের হার কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি অর্জনে ভূয়সী প্রশংসা করেছে । বিশ্বব্যাংকের মতে, এ দেশে দারিদ্র্যের হার সাড়ে ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বব্যাংকের ‘প্রভার্টি অ্যান্ড শেয়ার প্রসপারিটি ২০২০: রিভসলস অব ফরচুন বা দারিদ্র্য ও সমৃদ্ধির অংশীদার: ভাগ্য বিপর্যয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রভার্টি অ্যান্ড শেয়ার প্রসপারিটি ২০২০ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য কোনোভাবে খাটো করে দেখার উপায় নেই। ১৯৭৩-৭৪ সালে বাংলাদেশের সাড়ে ৮২ শতাংশই মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত। হতদরিদ্রের হার ছিল ৪৮ শতাংশ। বর্তমানে এ হার সাড়ে ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, বিশ্বে অতি গরিব মানুষের সংখ্যা বেশি এমন দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। এ দেশ ২ কোটি ২৯ লাখ হতদরিদ্র মানুষ বাস করেন। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ২৮ কোটি ৪৬ লাখ হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে ভারতে।
এদিকে দৈনিক ১ দশমিক ৯০ মার্কিন ডলার আয় হলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে দারিদ্র্যসীমার বাইরে বা হতদরিদ্র বলে আখ্যা দিয়ে থাকে বিশ্বব্যাংক।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যায় বিশ্বে নাইজেরিয়া দ্বিতীয় অবস্থানের রয়েছে। দেশটিতে ৭ কোটি ৭৫ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন। কঙ্গো রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। দেশটিতে ৫ কোটি ৩৩ লাখ মানুষ হতদরিদ্র। আর ৩ কোটি ৩৮ লাখ হতদরিদ্র মানুষ নিয়ে ইথিওপিয়ার অবস্থান চতুর্থ। আর তানজানিয়ার অবস্থান পঞ্চম। দেশটিতে ২ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন।
বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের ২৫ লাখ নিম্ন ও মাঝারি মানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রায় ২০ শতাংশ অবদান রাখছে। এপ্রিলে করোনার ধাক্কায় টিকে থাকতে এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকার স্বল্প সুদে ভর্তুকি ২৩০ কোটি ডলার প্রণোদনা দিয়েছে। রফতানি আয়ের প্রধান উৎস তৈরি পোশাক খাতেও সরকার স্বল্প সুদে প্রণোদনা দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ২৫ বছরে বিশ্বে শত কোটি মানুষ দারিদ্র্য জয় করেছেন। এতে দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছে ১০ শতাংশে। কোভিড-১৯ মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের কারণে ২০৩০ সালে বিশ্বে দারিদ্র্যের হার ৩ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য চরম হুমকিতে পড়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের ৭০ কোটির বেশি মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনের গতিও কমে এসেছে। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে এসডিজি আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে অতিদারিদ্র্য দূর করার লক্ষ্য পূরণে সংশয় প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।