মোঃলোকমান হোসেন,যশোর জেলা প্রতিনিধি:-ভালবাসা কিংবা শ্রদ্ধা নিবেদনে ফুলের বিকল্প কল্পনা করা যায় না।হরেক রকমের ফুলে শ্রদ্ধা ভালবাসা নিবেদন করে মানুষ।সেই ফুলের সারাদেশে চাহিদার ৭০ শতাংশ যোগান দিচ্ছে যশোরের গদখালি এলাকার চাষীরা।সমাগত বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিবস দুটি ঘিরে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালির চাষীরা।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার প্রায় ৫ হাজার কৃষক দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ পরিচালনা করেন।এবারের বিশ্ব ভালোবাসা দিবস,আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস,স্বাধীনতা দিবস ও বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে গদখালী এলাকার কৃষকরা ৬০-৭০ কোটি টাকার ফুল সরবরাহ করবে বলে আমি আশাবাদি।চাষিরা অনেক ফুল উৎপাদন করে গ্রাহকের নিকট বিক্রি করতে পারবে।আশা করছি কৃষকরা তাদের ফুলের অনেক ভালো মূল্য পাবে।ঝিকরগাছা উপজেলার ফুলের রাজধানী গদখালী ও পানিসারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,মাঠ জুড়ে বাহারী ফুলের সমাহার।রঙিন জারবেরা,গোলাপ,গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা,চন্দ্রমল্লিকা,গাঁদা ফুল যেন মায়া ভরা প্রকৃতিকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।প্রায় প্রতিটা ক্ষেতেই চাষীরা গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে।আসন্ন বসন্ত বরণ,বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস ঘিরে ব্যস্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে।এই তিনটি উৎসবকে ঘিরে ৫০ লক্ষাধিক টাকার বাণিজ্যে হবে বলে আশাবাদী ফুল চাষীরা।
ফুল চাষি নজরুল ইসলাম খোকন ও আলমগীর হোসেন বলেন,প্রায় চার বিঘা জমিতে জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা,গ্লাডিওলাস ও রজনীগন্ধা ফুল রয়েছে।বসন্ত বরণ ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ফুল সরবরাহ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ফুলের ভরা মৌসুমে নাওয়া খাওয়া নেই।তারা জানান,এক বিঘা গোলাপ চাষে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়।এরমধ্যে ৪ হাজার চারার দাম ৪০ হাজার টাকা।আর রোপনসহ অন্যান্য খরচ আরও ৪০ হাজার টাকা।এছাড়াও পরিচর্যার খরচ রয়েছে বাড়তি।একবার রোপনে ৬-৭ বছর পর্যন্ত গোলাপ ফুল পাওয়া যায়। স্থানীয় পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানান,ভালবাসা দিবসে ফুল বিক্রির হার বেশি হয়।বাজারে জারবেরা,গোলাপ,রজনীগন্ধা ফুলের চাহিদা বেশি।কৃষকরাও দাম ভালো পায়।প্রতি বছরই ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ও পানিসারা ইউনিয়ন এলাকায় ফুলের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।সরকারের পক্ষ থেকে ফুলচাষিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফুল চাষিদের ব্যাংক থেকে ফুল চাষের উপরে ঋণ সহজ করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার।ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃজাহিদুল ইসলাম জানান,ঝিকরগাছায় ফুল আমাদের একটা ঐতিহ্য।ফুল চাষ করে এলাকার দুঃস্থ নারীরা আয় করে স্বাবলম্বী হচ্ছে এবং এলাকার বেকার সমস্যার সমাধান হচ্ছে। এটাকে আমরা পর্যটন আকর্ষণ কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা এবং ফুল চাষিদের নতুন নতুন ফুল উৎপাদনে বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করছি।ঝিকরগাছা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাহিদ আক্তার জানান,ফুল চাষে এলাকার দুস্থ নারীরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।অর্থনৈতিকভাবে এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে।বেকার সমস্যার সমাধান হয়েছে।ঝিকরগাছার ফুল রপ্তানিতে এলাকার সুনামও বাড়ছে।