আপনি কি সুস্থ থাকতে চান? তবে আপনার সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। আর ভাল ঘুমের জন্য চাই আরামদায়ক বিছানা, বালিশ আর শান্ত পরিবেশ। বিশেষ করে বালিশ ঠিকঠাক না হলে অনেকেই শান্তিতে ঠিক মতো ঘুমোতে পারেন না। সারা রাত এপাশ-ওপাশ করে কেটে গেলেও সে ভাবে ঘুম হয় না। তাই ভাল ঘুমের জন্য বালিশটা হওয়া চাই একদম ‘পারফেক্ট’। কিন্তু কোন ধরনের বালিশকে ‘পারফেক্ট’ বলা যেতে পারে জানেন?
চলুন জেনে নেওয়া যাক ভাল ঘুমের জন্য ‘পারফেক্ট’ বালিশ বেছে নেওয়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস-
বালিশের আকার: বালিশের আকৃতি আপনার পছন্দ মতোই নির্বাচন করতে পারবেন। তবে খুব বেশি ছোট বালিশে আপনার ঘুম ভাল হবে না। মিডিয়াম, লার্জ, স্ট্যান্ডার্ড, কিং, কুইন ইত্যাদি নানা মাপের বালিশ বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এর থেকে আপনার পছন্দসই একটি বালিশ বেছে নিতে পারেন।
বালিশের কভার: বালিশের কভার খুব বেশি খসখসে হওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে কারুকাজ করা চাদরের সঙ্গে যেই বালিশের কভারগুলো দেওয়া থাকে, সেগুলো রাতে ঘুমানোর সময় ব্যবহার করা উচিত না। বালিশের কভার হিসেবে নরম সুতির কাপড়ের বা সার্টিন কাপড়ের কভারই সবচেয়ে ভাল।
বালিশের উচ্চতা: অতিরিক্ত উঁচু বা একদম নিচু বালিশ ঘুমের জন্য এবং স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভাল নয়। বালিশের উচ্চতা হওয়া উচিত মাঝারি। বালিশের উচ্চতা এমন হওয়া উচিত, যাতে কাঁধ বা ঘাড় না বাঁকিয়ে মোটামুটি সোজা বা সমান্তরাল রেখে শোয়া যায়। যদি এক পাশে ফিরে শোওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে বিছানায় শোওয়ার পর কাঁধের সঙ্গে গলার উচ্চতা যতটুকু, ততটুকুই হওয়া উচিত বালিশের উচ্চতা। আর যদি আপনি চিৎ হয়ে শুতে পছন্দ করেন, তাহলে আপনার ঘাড় এবং বালিশের উচ্চতা সমান্তরালে থাকা উচিত।
বালিশের উপকরণ: বালিশের উপরকরণ প্রাকৃতিক হওয়াই ভাল। ফোমের বালিশ বেশ নরম হলেও ঘুমনোর জন্য মোটেই তেমন আরামদায়ক নয়। এ ধরনের বালিশে স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হয়। তাই তুলার তৈরি বালিশই ভাল ঘুম এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
বালিশ কেমন হবে তা তো জানলেন। আসুন এবার জেনে নিই ঘুমানোর আগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস-
১) ঘুমোনোর আগে হাল্কা গরম পানিতে ভাল করে গোসল করুন।
২) জন্মলগ্নের সময়কার পোশাক পরে ঘুমোনোই সবচেয়ে ভাল। এতে শরীর সবচেয়ে রিল্যাক্সড থাকে তবে, তা না পারলে খুবই হালকা জামাকাপড় পরে ঘুমোন।
৩) উপুড় হয়ে ঘুমোবেন না এতে পেটে চাপ পড়ে, ঘুমও ভেঙে যেতে পারে।
৪) ঠিক ঘুমোনোর আগে ভরপেট জল খাবেন না যাতে রাতে বার বার প্রাকৃতিক কারণে ঘুম ভেঙে যায়। বরং ঘুমোনোর এক ঘণ্টা আগে জল খেয়ে নিন যাতে বাথরুমের কাজ সেরে ঠিক সময়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন।
৫) পাশবালিশ বা কোল বালিশ নিয়ে ঘুমোলে ঘুম তাড়াতাড়ি আসে এবং অনেকটা গাঢ়ও হয়।
৬) বিছানায় শুয়ে শুয়ে টিভি দেখবেন না ঘুমের আগে এতে ঠিক সময়ে ঘুম আসতেও চায় না এবং ঘুম পাতলা হয়।
৭) খেয়েই ঘুমিয়ে পড়বেন না। এতে বদহজম হয়ে ঘুম ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চেষ্টা করুন ঘুমের অন্তত ২ ঘণ্টা আগে ডিনার সেরে নিতে। রাতে বেশি মশলাদার অথবা তেলঝালের খাবার না খাওয়াই ভাল।
৮) বেডরুমের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং গুছিয়ে রাখুন। পাশাপাশি বেডরুমে নরম আলো রাখুন যাতে ঘুমোনোর পরিবেশ তৈরি হয়।
৯) ঘুমের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস করবেন না। বরং প্রতিদিন হালকা শরীরচর্চা করুন। সন্ধেবেলা যতটা পারা যায় ভারী কাজ করুন। শরীর ক্লান্ত থাকলে আপনা থেকেই ভাল ঘুম হবে।
১০) মদ খেয়ে লোকে ঘুমিয়ে পড়লেও এতে ঘুম কিন্তু ভাল হয় না। অ্যালকোহল এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার ঘুমোনোর আগে খাবেন না।