আফগানিস্তানে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে প্রায় ৬ হাজার বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। তালেবান গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি।
ইউএন অ্যাসিসট্যান্স মিশন ইন আফগানিস্তানের (ইউএনএএমএ) প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে আফগানিস্তানে ৫ হাজার ৯৩৯ জন হতাহত হয়েছেন, এদের মধ্যে ২ হাজার ১১৭ জন নিহত ও ৩ হাজার ৮২২ জন আহত।
ইউএনএএমএ’র ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বেসামরিক লোকদের ওপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব সৃষ্টিকারি উচ্চমাত্রার সহিংসতা অব্যাহত আছে, আফগানিস্তান এখনও বেসামরিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে।”
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার হতাহতের সংখ্যা ৩০ শতাংশ কম হলেও ইউএনএএমএ বলছে, গত মাসে কাতারের রাজধানী দোহায় সরকারি ও তালেবান মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার পরও সহিংসতা কমেনি।বরং শান্তি প্রচেষ্টার উদ্যোগ সত্ত্বেও এ সময়টিতে তালেবানের তৎপরতা বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বেসামরিক হতাহতের ৪৫ শতাংশ ঘটনার জন্য তালেবান, ২৩ শতাংশের জন্য সরকারি সেনারা এবং ২ শতাংশের জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী দায়ী। অবশিষ্ট অধিকাংশ হতাহতের ঘটনা দুই পক্ষের গোলাগুলির মাঝে পড়ে যাওয়ার কারণে অথবা আইএস জঙ্গিদের কারণে বা ‘অনির্ধারিত’ সরকারবিরোধী অথবা সরকারপন্থি বিভিন্ন উপদলের হামলার কারণে ঘটেছে।
হতাহতের অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে স্থলযুদ্ধে, এরপর আত্মঘাতী ও রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমা হামলায়, তারপর তালেবানের পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে এবং আফগান বাহিনীর বিমান হামলায় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ মিশন।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় কথিত সন্ত্রাসবাদী হামলার পর আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্য নিয়ে আমেরিকা দেশটিতে সামরিক আগ্রাসন চালায়। সেই সময় মার্কিন বাহিনীর পথ অনুসরণ করে ন্যাটো জোটের অন্য সদস্যদেশগুলোও আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন করে।
তারপর থেকে গত ১৯ বছর ধরে দেশটিতে লড়াই চলছে। এই লড়াই শেষ করার লক্ষেই দোহায় শান্তি আলোচনা শুরু করা হয়। সুত্রঃ পার্সটুডে।