মো. কামরুজ্জামান, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার বারহাট্টায় স্বামীর তৃতীয় বিয়েতে প্রতিবাদ করাতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে অসহ্য ও বর্বর নির্যাতন করেছে পাষন্ড স্বামী। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।
তৃতীয় বিয়ের প্রতিবাদ করায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন,অশ্লীল বকাবকি, পেটে লাথি ও মুখে সিগারেটের একাধিক ছ্যাঁকা। জলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকায় দ্বগ্ধ হয়ে বারহাট্টা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয় মনি আক্তার নামে ঐ আহত গৃহবধূ। অভিযুক্ত ঐ নিষ্ঠুর স্বামী খোরদেশ মিয়ার ছেলে মোঃ হাজিবুল। সংবাদ পেয়ে আত্মীয়-স্বজনগণ মনি আক্তারকে উদ্ধার করে এবং যথাযথ চিকিৎসার জন্য বারহাট্টা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং তাকে সেখানে ভর্তি করে।
মনি আক্তার নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার গাগলাজুর বরহাটি গ্রামের বারেক তালুকদারের মেয়ে। মনি আক্তারের ভাষ্যমতে তার স্বামী হাজিবুল প্রথমে তার বড় বোন নাসিমাকে বিয়ে করে এবং তিনটি সন্তান রেখে বড় বোন মারা গেলে তার সন্তানদের দেখাশোনা ও নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে প্রায় ১১ বছর আগে বড় বোনের স্বামীর সাথে পারিবারিকভাবে তাকে বিয়ে দেয়া হয়। তারপর কাজের জন্য ঢাকা চলে যায় তার স্বামী। এমনকি ঢাকা যাওয়ার পর স্বামী তার কোন খোঁজ খবর নিত না। ফলে ভরনপোষণ ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অধিকাংশ সময় বাবার বাড়িতে অবস্থান করত। মাঝেমধ্যে তার স্বামী হাজিবুল বাড়ি আসলে সামান্য বিষয় নিয়ে তাকে গালাগালি ও নির্যাতন করতো।
অল্প কিছুদিন আগে সিজারে মনি আক্তারের একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। এমনকি সিজারের খরচপত্রও তার বাবার বাড়ির লোকজন বহন করেছে বলে জানান মনি আক্তার। এই রকম পরিস্থিতির মাঝখানে মনি আক্তারের স্বামী হাজিবুল কয়েকদিন আগে নতুন বউ নিয়ে বাড়িতে চলে আসে এবং এর প্রতিবাদ করাতে ঐ গৃহবধূর উপর শুরু হয় নিষ্ঠুর অত্যাচার। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ঐ মহিলাকে অশ্লীল গালাগালি ও মারধর শুরু করে। সিজারের জন্য সেলাই করা পেটে স্বজোড়ে লাথি মারলে রক্তক্ষরণ হয় এবং এক পর্যায়ে জ্বলন্ত সিগারেট দিয়ে তার মুখে অসংখ্য ছ্যাঁকা দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে এবং আত্মীয় স্বজনরা এসে তাকে বারহাট্টা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
বারহাট্টা উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাঃ মুজাদ্দিদ রহমান কাশফি বলেন, মনি আক্তার মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। তাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। বারহাট্টা থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, উক্ত বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।