প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব না দেওয়ার মূল্য চোকাতে হচ্ছে ফ্রান্সকে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপের দেশটিতে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে এই ভাইরাস। আর যার জেরে দেশে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরি অবস্থার পাশাপাশি রাজধানী প্যারিস সহ ৯টি শহরে কার্ফু জারির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সন্ধ্যা সাতটা থেকে ভোর ছ’টা পর্যন্ত নৈশ কার্ফু জারি থাকবে। আগামী শনিবার থেকেই ওই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে।
চলতি বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ফ্রান্সে তাণ্ডব চালিয়েছিল চিনের উহান থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। কঠোর লকডাউন ও বিধিনিষেধ জারি করে কোনওভাবে সেই তাণ্ডব ঠেকানো হয়েছিল। সংক্রমণ আর মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমে আসতেই লকডাউন প্রত্যাহারের পাশাপাশি বিধিনিষেধে শিথিলতা এনেছিল ফ্রান্স সরকার। তখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে। কিন্তু সেই সতর্কবার্তায় কর্ণপাতই করেননি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
এদিকে গত জুলাই মাস থেকে ইউরোপের দেশটিতে ফের ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে করোনার সংক্রমণ। লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়তে থাকে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। গত ১০ অক্টোবর একদিনে আক্রান্ত হন ২৭ হাজারের বেশি মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২২ হাজার ৫৯১ জন। মারা গিয়েছেন ১০৪ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা আট লক্ষ ছুঁইছুঁই করছে। আর করোনার বলি হয়েছেন ৩৩,০৩৭ জন।
বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানান, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে রাজধানী প্যারিস, গ্রেনোবাইল, লিলি, লিয়ঁ, আইক্স-মার্শেই, সেন্ট এটিনে, টিউলস, আইল-ডে-ফ্রান্স এবং মন্টপেলিয়ার শহরে নৈশ কার্ফু জারি করা হচ্ছে। আগামী শনিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে ওই কার্ফু চালু হবে। কমপক্ষে চার সপ্তাহ ধরে সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত এই বিধি-নিষেধ জারি থাকবে। কেউ এই নিয়ম ভঙ্গ করলে তাকে ১৩৫ ইউরো জরিমানা গুনতে হবে।’
তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হতেও দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। তাঁর কথায়, ‘দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। তবে পরিস্থিতির উপর আমরা নিয়ন্ত্রণ হারাইনি। প্রথম দফার সংক্রমণ থেকে অনেকটাই শিক্ষা নিয়েছি। ফলে গতবারের চেয়ে এবার ভালভাবেই সংক্রমণের মোকাবিলা করতে পারব।’