কি হচ্ছে দেশে!২০ বছর পর ভেংগে গেল গনফোরাম। আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে এই দলের জন্ম দিয়েছিলেন ডঃ কামাল হোসেন। জাতির জনকের ঘনিষ্ঠজন এবং সংবিধান প্রনেতা হিসাবে ড. কামাল হোসেন একজন স্বচ্ছ ব্যক্তি হিসাবেই পরিচিত সকলের কাছে। দল থেকে বহিষ্কৃত আরেক নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টুকে সেক্রেটারী করে গনফোরাম কার্যক্রম চালিয়েছে। সব বক্তৃতায় সংবিধান আর বংগবন্ধুর কথা বললেও বংগবন্ধুর দল আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছেন ড. কামাল হোসেন। জাতির জনককে হত্যা করে যারা স্বাধীনতার স্মৃতি বিনষ্ট করেছে, তাদের সংগেও ঐক্য করে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করার হুমকি দিয়েছেন। গনফোরাম গঠিত হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে আশার সঞ্চার হয়েছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন, রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসাবে গনফোরাম ভূমিকা রাখবে। ড,কামালের গনফোরাম সেই প্রত্যাশাটি পূরন করতে পারেনি। বি এন পি’র মত দলের সংগেও জোট বেধে জামাত কে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এখন বয়সের ভারে দুর্বল খ্যাতিমান আইনজ্ঞ হয়েও রাজনীতি সংগঠিত করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। জীবনের এই বয়সে ড,কামাল হোসেন অবসরের ঘোষনা দিলেই বরং প্রসংশিত হতেন। কিন্তু বাংলাদেশে এই নজির নেই। বিদেশী শিক্ষায় শিক্ষিত ড, কামাল হোসেনও পারলেননা। মুসলীম লীগ, জাসদ, ন্যপের মত গনফোরামও এখন বিভক্তির খেলায় দুর্বল হয়ে পরলো।
একই অবস্থা এখন বি এন পিতেও। স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য তারেক জিয়া ১০ কোটি টাকা দাবী করেছে। দলের মহাসচিব পরিবর্তনের গুঞ্জন চলছে বহুদিন ধরেই। সিনিয়র নেতারা তারেক জিয়ার বক্তব্যে বিব্রত হচ্ছেন, প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানাচ্ছেন। বেগম জিয়া জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেলেও মুক্ত নন। শারিরীকভাবেও সক্ষম নন বেগম খালেদা জিয়া।
এমন অবস্থায় উগ্রবাদী ধর্মান্ধ মৌলবাদ মাথা চাড়া দিচ্ছে দেশে। কৌশলে বিভিন্ন দলে ঢুকে রাজনীতির শিষ্ঠাচার বিনষ্ট করে চলেছে। বিদেশী মদদে প্রচারনা চালাচ্ছে দেশের বিরুদ্ধে- স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। দেশের উন্নয়নকে কটাক্ষ করে সরকারের বিরুদ্ধে জনগনকে ক্ষেপিয়ে তুলছে। কি হচ্ছে তা না জেনেই রাজনৈতিক নেতারা সরকার উৎখাতের আহবান জানাচ্ছে। অনেকেই বলে ফেলেন, নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জয়ী হতে পারবেনা। তাহলে কোন দলের পক্ষে ভোট দিবে জনগন? একটি দলকি আছে যে দল নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারবে? বি এন পি বিজয়ী হলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? সরকার যদি অযোগ্য হয় তাহলে আমিও অন্যের সংগে সরকার পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিব। কিন্তু কেন সরকারকে উৎখাত করতে হবে তা জানা জরুরী। বিগত কোন সরকারটি এর চেয়ে বেশী উন্নয়ন করতে পেরেছে? তথ্যভিত্তিক উন্নয়ন চিত্র দেখাতে না পারলে আমি বর্তমান সরকারকেই সমর্থন করবো। সব সূচকেই বাংলাদেশকে উন্নয়নের ইংগিত দিচ্ছে, যদি কারো কাছে এর ভিন্ন চিত্র থাকে তা প্রকাশ করুন- জনগনকে অবহিত করুন। শুধু বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে জনগনকে বিভ্রান্ত করবেননা। যারা দলের অবস্থান ধরে রাখতে পারেন না তারা দেশকে রক্ষা করবেন কিভাবে? দলের পদ দিতে যারা ১০ কোটি টাকা দাবী করেন তারা রাষ্ট্রের ক্ষমতা পেলে দেশটাকেই বিক্রি করে দিবে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরেন্টো, কানাডা
৩০ সেপ্টম্বর ২০২০।