সরকারের সমালোচনা হবেই। ড্রাইভার চুরি করলেও দায়টি সরকারের। রাজনৈতিক নেতাদের কথা বলার বিষয় দরকার। দুর্নীতির কথা সকলেই বলে কিন্তু, দুর্নীতি নির্মূল করার উদ্যোগ নেয়নি কোন সরকারই। বর্তমান সরকার সেই উদ্যোগটি নিয়েছে, শুরু হয়েছে আলোচনা আর সমালোচনা। বিগত নির্বাচনে এই বিষয়ে প্রতুশ্রুতিও দিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। অভিযানটি শুরু করেছেন নিজের দল থেকেই। এখন অনেক প্রতাপশালী নেতারাও চুপ হয়ে গেছেন। এই দুর্নীতি শুধু রাজনৈতিক নেতারাই করেনি, সরকারী আমলারাও লূটপাট করেছে। দেশের সম্পদ লুট করেছে তারাই বেশী। শুধু বাংলাদেশেই না বিদেশেও অভিজাত এলাকায় বাড়ীঘর কিনে এখন তারা রাজকীয়ভাবে জীবনযাপন করছে পরিবার নিয়ে। অনেক মন্ত্রীর সংগে কথা বলে তাদের অসহায়াত্বের কথা জেনেছি। সংগবদ্ধ সরকারী দুর্বৃত্তদের কাছে মন্ত্রীরাও অসহায়। একজন ড্রাইভারও শত কোটি টাকার সম্পদ আর ২৪ টী বাড়ীর মালীক। লাইনম্যান, মিটার রিডার আর অফিসের পিয়নও এখন বিলাসবহুল গাড়ীতে চড়ে।
সরকারের সব অর্জন দুর্বৃত্তরা খেয়ে ফেলেছে। ব্যংক থেকে যারা ঋন নিয়ে পালিয়ে গেছে তাদের কথা আলোচনায় আসছে। যারা সব জেনেও কমিশন নিয়ে ঋন অনুমোদন দিয়েছেন, তাদের নাম কেউ বলেনা। লোন দাতারাওত সমান ভাবে দায়ী। এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের সংগেও সখ্যতা করতে চেষ্টা চলছে অবিরত। একেবারেই যে সহযোগিতা পাচ্ছেনা তা বলা যাবেনা। রেলওয়ে, বিমান এবং যোগাযোগের মত লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলি এখন লোকসান দেখাচ্ছে। রেলের টিকিট পাওয়া যায়না, বিমানের টিকিট কিনতে ঘুষ দিতে হয়। বিমানে কোন সিট খালী থাকেনা। রেলেও টিকিট কিনে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। তাহলে এই প্রতিষ্ঠানে লস হয় কিভাবে? আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশী হলে বা চুরি হলে লসত হবেই। ব্যায়ের হিসাবটি যারা দেখার কথা তারা হিসাব দেখেননা, ভাগ দেখেন। কত টাকা ভাগ পেলেন তা দেখেই হিসাব দাখিল করেন। লালু প্রসাদ যাদব ভারতের রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন। ভারতের রেলের অবস্থাও ছিল একই রকম। লালু প্রসাদ ভারতের রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তর করে দেখিয়েছেন। এমেরিকার বোষ্টন ইউনিভার্সিটিতে ডাকা হয়েছিল লালুকে, জানতে চেয়েছে কিভাবে লালু এই কঠিন কাজটি করেছেন। লালু প্রসাদের বাচন নিয়ে সমগ্র ভারতে প্রচারনা আছে। সে তার ভোজপুরি ভাষায় যা বলেছেন তার মর্মাথ হলো, তিনি চুরি আর দুর্নীতি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এমন একজন লালু কি নেই বাংলাদেশে যে চুরি বন্ধ করতে পারে? পারলে বাংলাদেশেও বিমান, রেল লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত হতে পারত। বিষয়টি ভেবে দেখার কেউ কি আছেন?
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরেন্টো, কানাডা
২১ সেপ্টম্বর ২০২০।