পর্যটন শিল্পটি যে কোন দেশের জন্যই রাজস্ব উৎপাদনের একটি বড় খাত। পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ আছে যাদের রাজস্ব উৎপাদনের অন্যতম ক্ষেত্রটি হল পর্যটন। ঐতিহাসিক এবং দর্শনীয় স্থান দেখতে পর্যটকরা ঘুরে বেড়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। আমাদের দেশেও বহু পর্যটন নিদর্শন রয়েছে এবং তা দেখার জন্য পর্যটকও আছে। ৭২, ৭৩ সালে প্রচুর বিদেশী পর্যটক বাংলাদেশে এসেছে এবং বংগবন্ধু গঠন করেছেন “পর্যটন কর্পোরেশন”। এই ক্ষেত্রটি ৭৫ এর পরে মূখ থুবরে পরেছে সঠিক ব্যবস্থাপনা আর নিরাপত্তার অভাবে। বিশ্ব পর্যটকত বটেই দেশীয় পর্যটকরাও এখন পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় কোন পর্যটন কেন্দ্রে যেতে নিরাপদ বোধ করেনা। ব্যাক্তি মালীকানায় দর্শনীয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে অর্থ খরচ করে ফলে রাজস্ব উৎপাদন ব্যহত হয়েছে চরমভাবে। অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি আর অনৈতিক কর্মের তীর্থ কেন্দ্রে এখন পর্যটন কর্পোরেশনর মটেল গুলি। এই শিল্পে লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা নেই কিন্তু বাংলাদেশে তা হচ্ছে। শুধু লোকসান বললে ভুল হবে, বাংলাদেশের পর্যটন কর্পোরেশন এখন একটি অকার্যকর লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। পর্যটকরা অধিক মুল্য দিয়ে হোটেলে থাকে নিরাপত্তার অভাবে। কোন প্রচারনাও নেই পর্যটন কর্পোরেশনের। বিদেশে হাই কমিশনকেও কাজে লাগান যেতে পারে কিন্তু কোন উদ্যোগ নেই কারো।
ভারতের পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটাতে Incredible India নামে একটি প্রতিষ্ঠান সারা দুনিয়ায় কাজ করছে। ভারতের মত দেশের জাতীয় রাজস্বের ৯ শতাংশ উৎপাদিত হয় পর্যটন শিল্পে। শুধু ভারত নয়, মালদ্বীপ পর্যটন নির্ভর দেশ। মিশর, অষ্ট্রিয়া, সুইজারল্যন্ড, থাইল্যন্ড, সিংগাপুরের রাজস্ব আয়ের বড় অংশটি যোগান দেয় পর্যটকরা। বাংলাদেশে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের সৌন্দার্য প্রচার করার কোন উদ্যোগ নেই। একটি ভাল সুভিনিয়র কেন্দ্রও নেই, আছে শুটকির দোকান। পর্যটন কর্পোরেশনের কর্ত্তাব্যক্তিরা বিষয়টি বোঝেন কিনা জানিনা। নিরাপত্তাটিও দেখার কেউ নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রকে উপযোগী আর উৎপাদনমুখি করে তোলাই সরকারের দায়িত্ব। নিরাপত্তা, যোগাযোগ আর থাকার সুব্যবস্থা নিশ্চিত হলে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পটি জাতীয় রাজস্ব উৎপাদনের গুরত্বপুর্ন ভুমিকা রাখতে পারে। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরেন্টো, কানাডা
২০ সেপ্টম্বর ২০২০।