আগষ্ট মাসটি এলেই ভয় ভয় লাগে। ৪৫ বছর হয়ে গেল বংগবন্ধুকে হত্যা করেছে খুনীরা। ৭৫ এর পরে নানারকম খেলা দেখেতে হয়েছে দেশে। নীতিভ্রষ্ট রাজনীতি আর ক্ষমতার লোভে দলবদলের খেলা দেখেছি প্রতিদিন। দম্ভকরে নিজেরাই বলে বেড়িয়েছে খুন করেছি পারলে বিচার করো! সেনাপতিরা আদর করে বীর খেতাব দিয়ে তোষামোদ করেছে খুনীদের। খুনীরাই শাসন করেছে দেশ, রাজনীতি হয়েছে সেনা সদরে। স্বাধীনতার শত্রুরা নেতা বনে গেছে,যোদ্ধারা হয়েছে অপরাধী। রাজাকার হয়েগেছে ফেক্টর, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি হয়েছে তারাই। জাতীর পিতার নাম নিশানা মুছে দিয়ে দেশদ্রোহিরা জননেতা হয়ে গেছে। নতুন প্রজন্ম জানতেই পারেনি কে ছিলেন শেখ মুজিব, কি ছিল স্বাধিনতার ইতিহাস? পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে আর্কাইভ থেকে যত সব চিহ্ন। দম্ভ সেনাপতি ডিফিকাল্ট করে দিলেন রাজনীতি আর, গনতন্ত্র ডুবে রইলো সেনা সদরে। নতুন করে সংগ্রাম করতে হয়েছে, আবারও প্রান দিতে হয়েছে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে। একটি বিষয় অজানাই রয়ে গেছে আজও, কারা হত্যা করেছে জাতীর জনককে। খুন করেছে কতিপয় কুলাংগার কিন্তু, মুল পরিকল্পনাটি কার? খুনীদের বিচার হয়েছে, কয়েক জনের ফাসিও কার্যকর হয়েছে কিন্তু, ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো ধরা পরেনি। এই খুনীদের বিচার নাহলে, ফাঁসি নাহলে জাতীর জনকের বিচার পুর্ন হবেনা। ১৫ ই আগষ্টের সেই দিনে জাসদ ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক দলের কোন সক্রিয়তা ছিলনা। সারা দেশে সবই ছিল আওয়ামী লীগের। সবখানে সেই রাতে মিলিটারি যায়নি, কেউ একজন বেড়িয়ে হুংকার দিলনা কেন? লন্ডনে বসে একজন বললেন “ফেরাউনের মৃত্যু হয়েছে”, বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী নিলেন অন্যজন, আবার কেউ বিবৃতি দিয়ে মন্ত্রী বনে গেলেন খুনীদের সভায়। বাকিরা সব নিরব থাকলেন। মেজর জামিলই শুধু ছুটে গিয়েছিলেন , গুলি খেয়ে মরেও গেলেন। খুনীরা চলে গেলে জাপানীরা (পাশের বাড়ীর) গিয়ে ছবি তুলে আনলেন সিড়িতে পরে থাকা মহানায়কের। নেতারা চলেগেলেন গোপন আস্তানায়। কাদের সিদ্দিকি ডাক দিয়েছিলেন, পারেননি, চলে গেছেন ভারতে। দলের অভ্যান্তরেও ভাংগনের খেলা খেলেছে খেলারাম, বাকিরা মারামারি করেছে নেতা হওয়ার। শেখ হাসিনা ফিরে না এলে কি হত দলের ভাবতে ভয় হয়। ৭৫ শিক্ষা দিয়েছে বাংলাদেশে। রাজনীতিও দেখেছে স্বাধীনতার বিপর্যয়। বুটের তলায় পিষ্ট গনতন্ত্র, সেনাপতিরা ক্ষমতায়। ৭৫ এর শিক্ষাটি ভুলে যাওয়া ভুল। কারন হিংস্র থাবা চারিদিক। খুন করে ক্ষমতার নেশা এখনো মাঝেসাঝে ইশারা করে, বুঝিয়ে দেয় খুনীরা মরেনি৷ নিজেরাই মারামারি করি,খুনীরা সব জোটবদ্ধ। ২১ এ আগষ্ট জানান দিল অস্তিত্বের আমরা সবাই নির্বাক। রাজনীতি সহজ নয় খুন করে ক্ষমতায় যাওয়া সহজ। এখন সহজ পথেই হাটছে রাজনীতি। ক্ষমতার সাধ পেতে খালুরেও বাবা ডাকে অনেকে। কে যে মুজিব প্রেমী বোঝা যায়না। জাতীর জনকের শাহাদত বার্ষিকিতে এই সংকাটাই জোড়ে সোড়ে মনে হয়। বংবন্ধু কন্যা দেশের অভাবনীয় সাফল্য এনে দিলেও নালিশের শেষ নেই দেশে। করোনার মহামারী আর বন্যায়ো মুখটি বন্ধ হয়নি হতাশ নেতাদের। সকল নিন্দাকে অগ্রাহ্য করে শেখ হাসিনা দেশকে অভিষ্ঠ লক্ষে নিয়ে যাবেন এই কামনাই করি।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
১৫ আগষ্ট ২০২০।