সমালোচনা কর্মকে শুদ্ধ করে। কাজ করলে ভুল হবেই, ভুলকে ধরিয়ে দেওয়াই সমালোচনা। গনতান্ত্রিক রাজনীতিতে সমালোচনা জরুরী, সব দেশেই রাজনৈতিক সমালোচনা হয়। গনতন্ত্র সেই শিক্ষাই দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে সর্বক্ষেত্রেই সরকারের সমালোচনা দলীয় বিবেচনায় হয়। রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যর্থতার দায় সরকারকে অবশ্যই নিতে হবে। রাষ্ট্রের পদ-পদবি ব্যবহার করে নৈরাজ্য সৃষ্টিকরিকেও আইনের আওতায় আনতে হবে। দলগত সমর্থনের সমালোচনা নিরপেক্ষ হয়না। দুর্নীতি, ঘূষ, অনিয়ম আর দুর্বিত্যায়নের বিরুদ্ধে সরকার অবস্থান নিয়েছে। রাজনৈতিক আশ্রয়কেও প্রশ্রয় দেয়নি, দুর্নীতিবাজ, দালাল আর চাটুকারদের। অনেকেই এখন আইনের হাতে বন্ধি। অপরাধীদের অন্ধকার জগতের তথ্য বেরিয়ে আসছে জনসম্মুখে। সরকারের পদ-পদবীর গুরত্ব পায়নি অপরাধ বিবেচনায়। সরকারী দলেও এখন ভয় ছড়িয়েছে। নেতারাও এখন সন্ত্রস্থ্য হয়ে পরেছে, আইনের হাতেও সোপর্দ হয়েছে অনেকে। শেকড় উচ্ছেদ অভিযান চলছে, দুর্নীতি ঘূষ আর দুর্বিত্যায়নের বিরুদ্ধে। দেশ বাঁচাতে এই দুষ্টাগ্রহ থেকে অপরাধ নির্মূল করতেই হবে। কিন্তু দীর্ঘদিনের সংগবদ্ধ অপরাধ চক্র এখন ক্যন্সারের মত বিস্তৃত সর্বক্ষেত্রে। এই চক্রকে উৎখাত করা সহজ নয় তবে, উদ্যোগটি শুরু হয়েছে। দুর্নীতি না কমলেও কিছুটা হলেও ভয় পেয়েছে দুর্নীতিবাজরা। মহামারীর পাশাপাশি দেশে এখন কয়েক লক্ষ মানূষ পানিবন্দি। এমন দুর্যোগে রিলিফ চোরদের মহাউৎসব শুরু হয়, এবার কেই সাহস দেখায়নি। থানার ওসি’র দুর্নীতির খবর উদ্ধার করেছে সরকার, হত্যা মামলায় বিচার হচ্ছে পুলিশের। প্রতারক, লুটেরা পুলিশ হেফাজতে, বন্ধ হয়েছে ক্যসিনো বানিজ্য। দলের নাম ভাংগিয়ে যারা সুযোগ নিয়েছে তারাও এখন অনেকে আত্নগোপনে। পাপিয়া, সাব্রিনারা লাল ঘরে বন্ধি। সঠিকভাবে চার্জগঠন হলে বিচার তাদের হবেই আদালতে। অনেকেই সমালোচনার ঝড় তোলেন টেবিলে, কিন্তু অপরাধের ক্ষেত্রটি বলেননা। অপরাধ এখন সর্বত্র। তদন্ত শুরু হলে অনেকেরই মূখটি ঢেকে আড়ালে চলে যেতে হবে। জলন্ত সিগারেট হাতে ধুমপানের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার মত দুর্নীতির সমালোচক বহু। ব্যর্থতার ফিরস্থি দেওয়াই সুশিল সাজা নয়, বাস্তবতা খুঁজে বের করা জরুরী । নালিশ পার্টির মতলবি অভিযোগ দলের পক্ষে দালালী, নিরপেক্ষ আলোচনা বা সমালোচনা নয়। নিরপেক্ষ বিবেচক নির্বাক হলে রাজনীতি থুবরে পরবে। রাজনীতি এখন মাঠে নয়, ফেসবুকে। অবাধ স্বাধীনতা রয়েছে বিজ্ঞাপনের রাজনীতিতে। মহামারির এতবড় বিপর্যয় মোকাবেলা করে দেশ এগিয়ে চলেছে শক্তি একটাই, যোগ্য নেতৃত্ব। জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই অসাধারন কৃতত্ব আর সাহাস দেখিয়েছেন দেশ পরিচালনায়। বলিষ্ঠভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থন নিয়েছেন তাই, হতাশা এখন অপরাধ চক্রের। প্রশাসনেও এখন দৌড় ঝাঁপ শুরু হয়েছে। বেতনভোগি কর্মচারীর বিত্ত্ববৈভবের খোঁজে নেমেছে দুদক। বাড়ী গাড়ীর মালীকানা হস্তান্তর শুরু হয়েছে অবসরে যাওয়া কর্মকর্ত্তাদেরও। সরকার অপরাধের বিরুদ্ধে কঠিন হলে সমালোচক ক্ষুদ্ধ হয়, কারনটিও সংগত। ১১ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। এতদিন হুঁশিয়ার করেছে, এখন অভিযানে নেমেছে সরকার তাই নালিশ পার্টি বেশামাল। করোনা আর বন্যা শেষ হলেই শেষ হবে পদ্মা সেতুও। দক্ষিন বংগের গ্রামের মানূষ উৎপাদনে সচল হলে, বদলে যাবে দেশ। গ্রামই হবে অর্থনীতির চালিকা শক্তি। পুঁজিবাদের দালাল আর, নালিশ পার্টির বালকেরা সেকথা বুঝেই এখন তৎপর সবখানে। শুধু রাজনীতিতে নয়, সমাজ বিবর্তনেও নালিশ পার্টি অপশক্তি। এই অপশক্তি নিরব হয় আঘাতে। সেই আঘাত শুরু হয়েছে, দেশ এখন এগুবেই। ফেসবুকের বিজ্ঞাপন আর ছবির রাজনীতির অবসান হবে শীঘ্রই। তাই জনতার সরব শ্লোগান হউক দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে, অপশক্তির বিরুদ্ধে। ষড়যন্ত্রের রাজনীতি নিপাত যাক, বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। জয় বাংলা।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
৯ আগষ্ট ২০২০।