বংগবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে ৪৫ বছর হয়ে গেল। আংশিক বিচার হয়েছে এবং খুনীদের কয়েকজনের ফাসি কার্যকর হয়েছে। একটি বিচার এখনো হয়নি, কারা আসলে বংগবন্ধুকে হত্যা করেছে এবং কেন? আজ টেলিভিশনে বংগবন্ধুর হত্যা নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সি আই এর একটি গোপন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এই রিপোর্টে পরিস্কার বলা আছে, শেখ মুজিবকে অপসারন করে আওয়ামী লীগেরই একজন ক্ষমতায় আসছে। ডিপুটি সেনা প্রধান জেনারেল জিয়ার সংগে সেনা কর্মকর্তাদের সাক্ষাতের কথাটিরও উল্লেখ আছে এই রিপোর্টে। মার্কিন দুতাবাসে কারা কারা গিয়ে সমর্থন চেয়েছিল যেন ভারত হস্তক্ষেপ করতে না পারে, সব এই রিপোর্টে রয়েছে। তার অর্থ হলো বংগবন্ধু হত্যা একটি পরিকল্পিত ঘটনা এবং, জড়িত রয়েছে অনেকেই। এরা কারা তাদের মূখ উম্মোচন করা জাতি এবং ইতিহাসের প্রয়োজনে জরুরী। খুনী ফারুক রশিদরা তদানিন্তন ডিপুটি সেনাপ্রধান জেঃ জিয়ার কাছে গিয়েছিল, পরামর্শ চেয়েছিল সে কথা ফাঁস করেছে খুনীরাই। একথা গোপন রাখার উদ্দেশ্যটি অগ্রাহ্য করার মত? বি এন পি নেতারা এখন জিয়াকে বহুদলীয় গনতন্ত্রের নায়ক দাবী করেন। অথচ বংগবন্ধুকে হত্যার পর বিচার বন্ধ করাই ছিল গনতন্ত্রকে হত্যা করা। গনতন্ত্রকে হত্যা করে রাজনৈতিক নির্যাতনের শুরুটি করেছেন জিয়া। দেশের স্বাধীনতার অংগীকার আর শপথ ভংগ করে স্বাধীনতার শত্রুদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করেছেন জেঃ জিয়া। বিনা বিচারে হত্যা, ফাঁসি দিয়ে গনতন্ত্রের কন্ঠ রোধ করেছেন জিয়া। কর্নেল তাহেরসহ জাসদ নেতাদের জেলজুলুম দিয়ে বিচ্ছিন্ন করেছেন জিয়া। দল ভাংগার রাজনীতিটিও শুরু করেছিলেন জিয়া। যারা জাতীর জনকের বুকে গুলি বিদ্ধ করেছে তারা ছিল, নির্দেশপ্রাপ্ত হত্যাকারী। মূল নেতৃত্ব দিয়েছে যারা তারাই মূল আসামি, তাদের বিচার না হলে বংগবন্ধুর হত্যার বিচার সম্পুর্ন হবেনা। একজন সৈনিক দেশ রক্ষার শপথ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহন করে। ৭৫ এ জেঃ জিয়া যেই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তার উপর ন্যাস্থ ছিল রাষ্ট্রের নিরাপত্তাটিও। রাষ্ট্রপতিকে হত্যার পরিকল্পনা তার বৈঠকখানায় হলে তিনি কি? এর জবাব দিতে হবে জনতাকে। অনেকেই ইদানিং বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করেন। সাহেদের পক্ষেও আইনজীবিরা লড়ছেন আদালতে। অনেক লঘু অপরাধেও জেল খাটছে অনেকে। আজ যদি জনতা জানতে চায়, বংগবন্ধুকে কোন অপরাধে হত্যা করা হলো তাহলে, ফেসে যাবেন অনেকেই। যারা এখনো বি এন পির পক্ষে জোড় গলায় কথা বলেন, প্রশ্নটি তাদের কাছেও। বংগবন্ধুকে হত্যা করার অন্তত একটি যৌক্তিক কারন উপস্থাপন করা হউক। নাহয় যারা সমর্থন দিয়েছেন তাদের চরিত্র উম্মোচন করা হউক। চোখের জলে সিক্ত হয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বক্তব্য দিয়ে বংগবন্ধু হত্যার দায় এড়ানো যাবেনা। হত্যাকারীরা চিহ্নিত হয়েছে, ষরযন্ত্রকারীদেরও চিহ্নিত করা হউক, মৃত কিংবা জীবিত। একটি দিন ধার্য্য করা হউক, সেই দিনে সমগ্র জাতী এই অপরাধীদের নামে থুথু ছিটাবে। শহীদ মিনারের মত একটি বেঈমান স্তম্ভ গড়া হউক। সেখানেই পালিত হবে থুথু দিবস।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
৭ আগষ্ট ২০২০।