বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবাধ সুবিধা (ফ্রি এক্সেস) দেয়া বন্ধ করতে টেলিকম অপারেটর ও অন্য ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে। গত সপ্তাহে তারা এ সিদ্ধান্তে আসে।
কারণ হিসেবে তারা জানায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফ্রি ব্যবহারের ফলে কিছু মানুষ এর অপব্যবহার করে ক্রাইম করছে। অনলাইন টেকক্রাঞ্চ এ খবর দিয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, এশিয়ায় ইন্টারনেটের সবচেয়ে বড় বাজারগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। এখানে এক কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। গত দশকে টেলিকম অপারেটর ও অন্য ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে ফেসবুক ও টুইটারের মতো প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানিগুলো। এই অংশীদারিত্ব জিরো-রেটিং চুক্তি বলে বেশি পরিচিত।
এই চুক্তির মাধ্যমে এসব কোম্পানি ব্যবহারকারীদের কাছে তাদের সেবা অবাধে পৌঁছে দেয়। এই চুক্তির ফলে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে ডাটা ব্যবহারের খরচ তুলে নেয় প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানিগুলো।
টেকক্রাঞ্চ-এর সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে বঙ্গ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহাদ মোহাম্মদ বলেছেন, বাংলাদেশে এমন জিরো-রেটিং বেশ কয়েক বছর ধরে বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশের দুটি বৃহৎ টেলিকম অপারেটর হলো গ্রামীণ ফোন ও রবি এজিয়েটা। তাদের সেবা গ্রহণকারীদের একাউন্টের টাকা শেষ হয়ে গেলেও তারা সাবস্ক্রাইবারদের ‘হ্যান্ডফুল সার্ভিস’ দিয়ে থাকে। এ দুটি কোম্পানিই বলেছে, তারা বিটিআরসির নির্দেশ মেনে চলার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
তবে ফেসবুক তার ডজন ডজন মার্কেটে ফ্রি বেসিকস নামে একটি প্রোগ্রাম পরিচালনা করে। এতে কোনো খরচ ছাড়াই আনলিমিটেড এক্সেস প্রস্তাব করা হয়। এখন বিটিআরসির নির্দেশের পর এই সেবা অব্যাহত থাকবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। ফেসবুক তার ফ্রি বেসিকস প্রোগ্রার্মের জন্য টেলিকম নেটওয়ার্কের ডাটা এক্সেসের ওপর নির্ভর করে।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুযায়ী, গ্রামীণ ফোন এবং রবি এজিয়েটা বাংলাদেশে ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অনেক মার্কেটের মধ্যে অন্যতম হিসেবে গণ্য করে ফেসবুক, যেখানে ফ্রি বেসিক অপারেশনে আছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু দেশ জিরো-রেটিং ব্যবস্থাপনা বাতিল করা হয়েছে । ভারতে ২০১৬ সালের শুরুর দিকে ফ্রি বেসিকস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয় যে, ফেসবুকের এই উদ্যোগ নিরপেক্ষতার নীতি ভঙ্গ করছে। ফ্রি বেসিকস কর্মসূচি বন্ধ হয়ে গেছে মিয়ানমারেও। ২০১৭, ২০১৮ সালে আরও অনেক মার্কেটে তা বন্ধ হয়েছে। এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে ফেসবুক কোনো মন্তব্য করে নি।